সাধারণত, কোনো কিছুর মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে আমরা কী করি? ফেলে দেই, আবার লাগবে জানলে নতুন আরেকটি কিনে আনি! আর, সফটওয়্যারের ক্ষেত্রে কিংবা ধরা যাক মোবাইল ফোনের ব্যালেন্সের ক্ষেত্রে?? রিনিউ করে নেই তাই তো? কিন্তু, অ্যান্টিভাইরাসের ক্ষেত্রে দেখা যায়- আমরা সেই লাইসেন্স এক্সপায়ার্ড অ্যান্টিভাইরাস নিয়েই দিনের পর দিন কাটিয়ে দেই!! সবচেয়ে মজার বিষয় এই যে, আমরা একবার চিন্তাও করি না এর কোনো পরিণতি হতে পারে কি না?
একবার গুগল করেই দেখুন…।
আর তা করতে না চাইলে, বেশ আমরাই বলে দিচ্ছি- আপনি যে ব্র্যান্ডের সাইবার নিরাপত্তা পণ্যই ব্যবহার করুন না কেন – মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে বা ফ্রি ট্রায়ালের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তা নিজেই আত্মঘাতী সফটওয়্যারে পরিণত হয়। প্রতিবার কম্পিউটার চালু করে ‘ইউর অ্যান্টিভাইরাস প্রটেকশন হ্যাজ এক্সপায়ার্ড’ মেসেজ দেখে দেখে আমরা হয়তো অভ্যস্ত হয়ে যাই বা কেটে দেই কিংবা এক পর্যায়ে অ্যান্টিভাইরাসটি সিম্পলি আনইনস্টল করে ভুলে যাই। কিন্তু, এদিকে এতে উন্মুক্ত হয়ে যায় এতদিন ধরে লক করে রাখা ক্ষতিকর প্রোগ্রামসমূহ। ফলে, একদিকে যেমন নতুন আসা ম্যালওয়্যার পিসিতে জায়গা করে নেয়, তেমনি অন্যদিকে পুরনো ভাইরাসগুলোও কাজ করতে শুরু করে। দুইয়ের ধাক্কায় ডিভাইসের ১২টা বেজে যায়- নিশ্চয়ই এই কথা বলার অপেক্ষা রাখে না!
যেকোনো অ্যান্টিভাইরাসের লাইসেন্সের সময়সীমা অতিক্রান্ত হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কিছু সার্ভিস যেমন রিয়েল টাইম প্রটেকশন, ক্লাউড প্রটেকশন, অটোম্যাটিক স্যাম্পল সাবমিশন ইত্যাদি বন্ধ হয়ে যায়। এর পাশাপাশি আরও যেসবে ব্যাঘাত ঘটে তা নিম্নরূপ:
সাইবার দুনিয়ায় প্রতিদিন যোগ হচ্ছে নিত্যনতুন ভাইরাস ও অনলাইন থ্রেট। আর, এসব ম্যালওয়্যার থেকে সুরক্ষা দিতে অ্যান্টিভাইরাসসমূহের ভাইরাস সিগনেচার তদানুযায়ী সার্বক্ষণিক আপডেটেড রাখা হয়। লাইসেন্সের মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে নিরাপত্তা সফটওয়্যার আর হালনাগাদ নিতে পারে না বলে ব্যবহারকারী রিস্কেই থেকে যান।
গেল বছর এবং তার আগের বছরের পুরোটা সময়জুড়েই ছিল র্যানসমওয়্যারের রাজত্ব। র্যানসমওয়্যার হচ্ছে কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের নিয়ন্ত্রণ কেড়ে নিয়ে তাতে থাকা সকল ফাইল ‘লক’ করে দিয়ে খুলে দেয়ার বিনিময়ে মুক্তিপণ দাবি করা। এসব র্যানসমওয়্যার কেবল সনাক্ত করার পর প্রতিষেধক তৈরি ও তা অ্যান্টিভাইরাসে যুক্ত করা হয় বলে মেয়াদবিহীন অ্যান্টিভাইরাসসমূহ তা পায় না।
ফিশিং হচ্ছে চেনাজনা সাইটের মতো দেখতে হুবহু নকল ওয়েবসাইট সাজিয়ে কাউকে ছলে-বলে, কৌশলে তাতে লগইন ক্রেডেনশিয়াল উল্লেখ করতে উৎসাহিত করে ইউজার নেম, পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নেয়া। ভালো মানের অ্যান্টিভাইরাসের লাইসেন্সড ভার্সনে ফিশিং থেকে সুরক্ষা পাওয়া গেলেও মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে তা আর সার্ভারের সাথে যোগাযোগ করতে পারে না বলে ব্যবহারকারী কোনো ফিশিং সাইটে পা দিলে তাও আর ধরতে পারে না।
মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়া অ্যান্টিভাইরাস এমনকি অনিরাপদ সাইট যাচাই করতে পারে না বলে ব্যবহারকারী আর সেফ ব্রাউজিং সুবিধা পান না। ফলে যেকোনো সময় অনলাইনে ভুল ট্রানজেকশন এমনকি কার্ড হ্যাকিংয়েরও শিকার হতে পারেন।