অনলাইনে নিরাপদ থাকতে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। খুব সাধারণ কিছু সচেতনতা মেনে চললেই যেকোনো আইডি হ্যাকিং হওয়া থেকে রক্ষা করা সম্ভব। চলুন তবে দেখে নেই সেই নিয়মগুলো।
ইন্টারনেটে যেকোনো ঠিকানায় প্রথমেই দেখে নিন ওয়েব অ্যাড্রেসের নামের শুরুতে https:// আছে কি না। যদি না থাকে সেই ওয়েবসাইটের কোথাও কোনো কিছু লিখা, ক্লিক করা নিরাপদ নয়।
পাসওয়ার্ড – এই একটি কমন ভুলে সবচেয়ে বেশি আইডি হ্যাক হয়। মনে রাখবেন- পাসওয়ার্ডে কোনো অবস্থাতেই নিজের বা প্রতিষ্ঠানের নাম কিংবা নামের অংশ, ব্যক্তিগত তথ্য যেমন জন্ম তারিখ, মোবাইল নম্বর অথবা প্রিয় মানুষের নাম ইত্যাদি যুক্ত করবেন না। দুই ধরণের আইডিতে একই পাসওয়ার্ড কিংবা আগে একবার ব্যবহার করা পাসওয়ার্ড আবার নতুন করে সেট করা – অনলাইনে নিরাপত্তার জন্য ক্ষতিকর। একেক অ্যাকাউন্টের জন্য একেক রকম পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। চিন্তার কিছু নেই, কৌশলী হোন – ধরুন, প্রথমে বড় ও ছোট হাতের মিলিয়ে ৩টি অক্ষর (a,B,c) নিয়ে তার সাথে দু’টি অংক (1,2) আর একটি চিহ্ন ($) যুক্ত করে ৬ অক্ষরের পাসওয়ার্ড তৈরি করুন। এবার যখন যে সাইটে এটা ব্যবহার করবেন তার প্রথম এবং শেষ অক্ষর যোগ করে দিন (যেমন গুগলে aBc12$ge আর ফেসবুকে aBc12$fk)! এতে সব সাইটে যেমন আলাদা আলাদা পাসওয়ার্ড দেয়া যাবে তেমনি সেসব মনে রাখাও সহজ হবে।
বিভিন্ন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় দরকারি-অদরকারি বিভিন্ন রকম পপ-আপ এসে থাকে। অনলাইনে নিরাপদ থাকতে এসব পপ-আপ বিজ্ঞাপনে ক্লিক করা থেকে সাবধান থাকা উচিত।
কাজের কিংবা বিনোদনের যে ধরণের সফটওয়্যারি ডাউনলোড করেন না কেন – নামানোর আগে অবশ্যই ‘দেখে নিয়ে’ নেক্সট বাটন চাপবেন। বেশিরভাগ সফটওয়্যারের সঙ্গে বিভিন্ন অ্যাডেড সফটওয়্যার থাকে যেসব থেকে ভাইরাস ও বিভিন্ন থ্রেট ছড়ায়।
অনলাইন কেনাকাটায় কোনোভাবে একবার ভুলে পা দিলে কার্ড জালিয়াতির শিকার হওয়াসহ অন্যান্য আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে বলে এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাবিধি মেনে চলা উচিত। অপশন থাকলে ক্যাশ অন ডেলিভারি ব্যবহার করুন – অন্যথায় অবশ্যই যেন কম্পিউটার ও মোবাইল ফোনে প্রিমিয়াম মানের ইন্টারনেট ও মোবাইল সিকিউরিটি ইনস্টল করা থাকে।
অনলাইনে থাকার মানে এই নয় যে সবার সাথে বন্ধুতা গড়ে তুলতে হবে। যে আইডি দেখে পুরনো বন্ধু বা দূরের কোনো আত্মীয় মনে হচ্ছে – অ্যাকাউন্টটি তাঁর নাও হতে পারে। তাই, অনলাইনে কাউকে বন্ধু করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন। পোস্ট করার সময় কেবল ফ্রেন্ডসদের জন্যই দিন। এছাড়াও নিজের জন্ম তারিখ, সন্তানের ছবি, কোথায় থাকছেন, কী করছেন, ছুটির পরিকল্পনা ইত্যাদি অনলাইনে কম শেয়ার করা ভালো। প্রাইভেসি’র পাশাপাশি এতে বিপদআপদের ঝুঁকি কমে।
উল্লিখিত সচেতনতার সঙ্গে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা হিসাবে বাসা কিংবা অফিসে ওয়াইফাই বা হটস্পট ব্যবহার করলে তা অননুমেয় পাসওয়ার্ড দিয়ে সুরক্ষিত করা এবং ব্যাংকিং ও একান্ত তথ্য গোপনীয় রাখা উচিত। নিরাপদ, অনলাইনের জন্য অবশ্যই কম্পিউটার ও মোবাইল ফোনে ভালো মানের ইন্টারনেট সিকিউরিটি ব্যবহার করুন।