অনলাইন ট্রানজেকশনে খারাপ বছরগুলোর একটি ২০১৪। শুধু রেকর্ডই না, এটি আরও দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে যে চাইলে নিরাপত্তা ব্যবস্থা শক্তিশালী নয় এমন সাইটে অনুপ্রবেশ ও অর্থ হাতিয়ে নেয়া যায়। যা তা ওয়েবসাইট থেকে শুরু করে অনিরাপদ ইন্টারনেট সংযোগ – এসব সমস্যা তো আগে থেকেই ছিল, বাড়তি হিসেবে তখন থেকে আরও যোগ হলো অনলাইনে ট্রানজেকশনের নিরাপত্তার অভাব।
ফেডারেল ট্রেড কমিশনের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী আমেরিকায় এক বছরে ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতিতে খোয়া যাওয়া অর্থের পরিমাণ এক বিলিয়ন ডলারের উপরে এবং তা ক্রমাগত বাড়ছেই।
“শুধু আমেরিকায়ই নয়, বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে একই ধরনের অপতৎপরতা। সম্প্রতি গ্রাহকদের কার্ড জালিয়াতি ও ব্যাংক হ্যাকিংয়ের ঘটনা ভাবিয়ে তুলেছে সংশ্লিষ্টদেরও।”
অনলাইনে কেনাকাটা ও ট্রানজেকশনে যেকোনো সময় আপনিও হতে পারেন প্রতারণার শিকার! প্রযুক্তিনির্ভর এই সময়ে, যখন মানুষ কেনাকাটাসহ সবকিছুতেই কার্ডের উপর নির্ভরশীল, হ্যাকাররাও মানুষের অর্থ ও গোপনীয় তথ্য হাতাতে সারাক্ষণ অনলাইনে ওত পেতে থাকে বলে সচেতন হওয়া প্রয়োজন এখনই। অনলাইনে নিরাপদ থাকতে এখানে তুলে ধরা হলো প্রয়োজনীয় কিছু টিপস।
অনিরাপদ সাইট থেকে কিছু কিনবেন না
হ্যাকারদের বহুল ব্যবহৃত একটি কৌশল হচ্ছে চেনাজানা কোনো বড় কোম্পানির নামে নকল ওয়েবসাইট সাজিয়ে সেখান থেকে পণ্য কিনতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা। তাই যে কোনো ওয়েবসাইট থেকে হুটহাট কেনাকাটা করা উচিত নয়। অনলাইন শপিংয়ের আগে যাচাই করে নিন এটিই উল্লিখিত কোম্পানির সাইট কি না? নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত কখনোই কোথাও পেমেন্ট সংক্রান্ত ফর্ম পূরণ করবেন না।
ফ্রি/পাবলিক ওয়াইফাই থেকে কোনো অর্ডার না
ফ্রি বা পাবলিক ওয়াইফাইগুলো শুধু যে অনিরাপদ তাই না, বরং ডেকে আনতে পারে হুমকিও। তাই, এসব থেকে ইন্টারনেটে সংযুক্ত হয়ে অনলাইনে শপিং অর্ডার করা ঠিক না। শুধু তাই নয়, এ ধরনের সংযোগ ব্যবহার করে কোথাও ক্রেডিট কার্ড তথ্য বা অন্য কোনো গোপনীয় তথ্যও শেয়ার করা উচিত না।প্রাইভেসি সেটিংস যাচাইডিভাইসের ডিফল্ট ব্রাউজার থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করলেও এর প্রাইভেসি সেটিংস দেখে নেয়া উচিত। আপনি এখান থেকে ক্ষতিকর সাইট ব্লক, কুকি চালু বা বন্ধ ও আপনার লোকেশন যেন শেয়ার না করা হয় – ইত্যাদি ঠিক করে নিতে পারেন।
ইউজার অ্যাকাউন্ট কন্ট্রোল চালু
অনেকেই পিসি বা ল্যাপটপে ইউজার অ্যাকাউন্ট কন্ট্রোল তথা অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কোনো কিছু পরিবর্তন করা হলে তার সতর্কতা দেখানো বন্ধ করে রাখে। এটা ক্ষতির কারণ হতে পারে যে কোনো সময়। ইউজার অ্যাকাউন্ট কন্ট্রোল চালু থাকলে নিজে থেকে পিসিতে কোনো প্রোগ্রাম ইনস্টল হতে চাইলে বা দুর থেকে কেউ আপনার ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ করতে চাইলে আপনি তা জানতে পারবেন।
অপরিচিতের মেইলে এটাচমেন্ট?
অপরিচিত কারো আইডি থেকে আসা মেইলের এটাচমেন্ট ফাইল খুলে দেখার কথা ভাবছেন? ভুলেও না! হ্যাকারদের সবচেয়ে বড় অস্ত্র মেইল এটাচমেন্ট। সাবধান! সব খোয়াবেন, টেরও পাবেন না। এছাড়াও পরিচিত মানুষের নামে মেইল এলেও খোলার আগে একবার সেন্ডারের নামে মাউস নিয়ে দেখুন ইমেইল ঠিকানাটাও একই ব্যক্তির কি না।
ফায়ারওয়াল – নিরাপত্তার বাল্যশিক্ষা
অনলাইন থ্রেট মোকাবেলায় কার্যকর উপায় ফায়ারওয়াল চালু রাখা। আপনি চাইলে উইন্ডোজের নিজস্ব ফায়ারওয়াল বা অন্য কোনো ফায়ারওয়ালও ব্যবহার করতে পারেন।
অ্যান্টিভাইরাসের কোনো বিকল্প নেই
আপনার যদি একটি পিসি বা মোবাইল থেকে থাকে, আর তা দিয়ে আপনি ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন – তবে আপনার জন্য অ্যান্টিভাইরাসের কোনো বিকল্প নেই। বাজারে বিভিন্ন নামের ও দামের অ্যান্টিভাইরাস পাওয়া গেলেও সবগুলোর কার্যকারিতা এক রকমের নয়। তাই দেখে-শুনে নিজের প্রয়োজনবুঝে যাচাই করে আপনার উপযোগী অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন। তবে, শুধু অ্যান্টিভাইরাস ইনস্টল করাই নয়, নিয়মিত আপডেট বা অটো-আপডেট চালু করে রাখতে হবে।