20
Apr, 2017

cyberbullying

সাইবার বুলিং – এতদিন কেবল শিশু/কিশোররা এর ভিক্টিম বলে ধারণা করা হলেও বিবিসি’র সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে মধ্যবয়সীরাও এখন সাইবার দুর্বৃত্তদের হয়রানির শিকার হচ্ছেন। নারীরা, বিশেষত শিক্ষিকাবৃন্দ বেশিরভাগ টার্গেটে পরিণত হলেও বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তালিকায় আছে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীসহ ফেসবুক ব্যবহারকারী গোষ্ঠীর একটি বড় অংশ। দৈনিক প্রথম আলো প্রকাশিত এক প্রতিবেদন অনুযায়ী – বাংলাদেশের ৪৯% স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীই সাইবার বুলিং-এর নিয়মিত শিকার। এছাড়াও, ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম এক সাক্ষাৎকারে জানান – দেশের তিন-চতুর্থাংশ নারীই সাইবার নিপীড়নের শিকার। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে এঁদের মধ্যে মাত্র ২৬% অনলাইনে হেনস্তার বিষয়টি প্রকাশ্যে এনে অভিযোগ করেন, এবং অন্যরা সামাজিকতার ভয়ে গোপন রাখেন।

আবেগে অফ কিংবা অনলাইনে কারও সাথে ভুল সম্পর্কে জড়িয়ে কেউ যখন পিছপা হতে চান, তখন ভয় দেখিয়ে বা মানসিক (সম্পর্ক অনলাইন থেকে অফলাইন অবধি গড়ালে শারীরিক অত্যাচারও হতে পারে) নির্যাতন করে কোনোকিছুতে বাধ্য করার চেষ্টাই হচ্ছে সাইবার বুলিং। সম্মানের ভয়ে বা পরিবারের কথা ভেবে অনেকেই এসময় ‘চুপ’ থাকে বলে অপরাধীরা তখন আরও বেশি সুযোগ নেয়। সাধারণত অর্থ ও অন্যান্য সুবিধা আদায়ের পাশাপাশি সাইবার বুলাররা এসময় অন্যদের দিয়েও একই ভিক্টিমকে নির্যাতন করে থাকে।

সাইবার বুলিং থেকে সতর্ক থাকতে করণীয়

  • সাইবার বুলিং থেকে নিরাপদ থাকতে প্রথমত ব্যক্তি ও সামাজিক জীবন পৃথক করুন – ঠিকানা, কলেজ, ফোন নম্বর ইত্যাদি কখনোই প্রকাশ করা উচিত নয়।
  • সস্তা জনপ্রিয়তার আশায় যে কাউকে অনলাইন ফ্রেন্ড বানানো থেকে বিরত থাকুন ও পোস্টের প্রাইভেসি ‘ফ্রেন্ডস অনলি’ রাখুন।
  • ফেসবুক বা অন্য কোনো ওয়েবসাইটে ছবি আপলোড করার আগে জেনে রাখুন – এটি যে কেউ নামিয়ে বাজে এডিট করে আবার আপলোড করতে পারে।
  • গায়ে পড়ে কেউ খাতির জমাতে চাইলে অযথা কথা না বাড়িয়ে ব্লক করে রাখুন।
  • ফেসবুক, ইমেইল ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া আইডি’র পাসওয়ার্ড কখনো কাউকে জানাবেন না।
  • অনলাইন আইডি নিরাপদ রাখতে কঠিন পাসওয়ার্ডের পাশাপাশি টুএফএ ব্যবহার করুন।
  • অপরিচিত নম্বর থেকে আসা কল ধরা থেকে বিরত থাকুন, একান্ত কেউ এসএমএস করে পরিচয় জানিয়ে কল দিলে কথা বলুন।
  • কেউ ফোনে বিরক্ত করলে তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি পরিবারকে জানিয়ে দিন।
  • এসএমএস পাঠিয়ে বা কেউ অনলাইনে বিরক্ত করলে স্ক্রিনশট রেখে দিন।
  • এরপরেও কেউ বিরক্তের চেষ্টা করলে আইনি সহায়তা নিন।

আইনি সহায়তা যেভাবে নিবেন

সাইবার বুলিং-এর শিকার হলে কখনোই চুপ করে থাকার কথা ভাববেন না, সরাসরি আইনের সাহায্য নিন। মনে রাখবেন, চুপ করে থাকলে সমস্যা কমবে না বরং অপরাধী আরও সাহস পেয়ে যাবে। তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং আইনগত সহযোগিতা দেয় এমন প্রতিষ্ঠানের শরণাপন্ন হোন।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬-এ ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইট বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক বিন্যাসে মিথ্যা বা অশ্লীল কিছু প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা আছে। আইন লঙ্ঘন করলে ১৪ বছর পর্যন্ত জেলও হতে পারে। হয়রানির ঘটনায় তথ্যপ্রযুক্তি আইন বা পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়ে থাকে।

হয়রানির শিকার যে কেউ সরাসরি বিটিআরসিতে যোগাযোগ করতে পারেন। বিটিআরসি ফোনে ও ইমেইলে দুইভাবেই অভিযোগ গ্রহণ করে থাকে। বিটিআরসির কম্পিউটার সিকিউরিটি ইনসিডেন্স রেসপন্স টিম এ ধরণের সমস্যায় সহায়তা করে থাকে। বিটিআরসিতে হয়রানির অভিযোগ জানাতে কল করতে পারেন (০২)৭১৬২২৭৭ নম্বরে বা ইমেইল পাঠাতে পারেন contact@csirt.gov.bd ঠিকানায়। এছাড়াও, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হটলাইন ১০৯২১ নম্বরে ফোন করলেও গোপনীয়তা রক্ষা করে এ ধরণের সমস্যার সমাধান করা হয়।

The Author

Abhijeet Guha

Abhijeet is an active blogger with decent experience in the IT Security industry. He researches on various topics related to cyber security and pens down his research in the form of articles & blogs. You can reach him at abhijeet@reveantivirus.com.
Abhijeet Guha
  Leave a Comment
Search for: