অন্তরঙ্গ মুহূর্তে ‘বিপ’ করে জ্বলে উঠলো মোবাইল ফোন বা ল্যাপটপের ক্যামেরার রেকর্ডিং লাইট, ঠিক তার পরের দৃশ্যেই দেখা গেল একান্ত সেই মুহূর্তের ছবিসহ ছাপা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ পত্রিকা! কিংবা, টাকা তুলতে ব্যাংকে গিয়ে আবিষ্কার করলেন – অ্যাকাউন্ট শূন্য – হলিউড আর বলিউডের মুভিতে এমন দৃশ্য দেখা গেলেও বাস্তবে আদৌ সম্ভব কি না তা নিয়ে সংশয় আছে অনেকেরই। তবে, এসব শুধু সেলুলয়েডের ফিতায় হয় ভেবে আগে হেসে উড়িয়ে দিলেও এবার ভাবতেই হচ্ছে। ব্যাখ্যা করার আগে চলুন দেখে নেই ডেইলি স্টার অবলম্বনে:
এভাবে সময়ের সাথে ক্রমশ বাড়ছে সাইবার হামলার ঝুঁকি। কেবল, আর্থিক বা বড় প্রতিষ্ঠান নয়, সাধারণ ব্যবহারকারীরাও যেকোনো সময় এর শিকার হতে পারেন। জেনে আরও অবাক হবেন-
অনেকেই মনে করেন যে তিনি যেহেতু ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না, নিশ্চয়ই তিনি ভাইরাসের আশঙ্কা থেকে মুক্ত। কিন্তু, এই ধারনাও বিফল যদি আপনি অন্যান্য পিসি/মোবাইল ফোন/পেন ড্রাইভ বা সিডি ইত্যাদি থেকে ফাইল কপি বা ব্যবহার করেন। তাই, অনলাইন কিংবা অফলাইনে যেকোনো অবস্থায় আপনার একান্ত ও গোপনীয় তথ্য, ছবি ইত্যাদি নিরাপদ রাখতে ও ডিভাইস ভাইরাস মুক্ত রাখতে করণীয়সমূহ তুলে ধরা হলো এখানে।
ফেসবুকে নিত্যদিনের খুঁটিনাটি শেয়ারিং থেকে টুকটাক অনলাইন শপিং – সবকিছুতেই একটু একটু করে একসময় মিশে যায় আপনার নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, ইমেইল আইডিসহ ব্যাংকিং নানবিধ গোপন তথ্য। তাই ফেসবুক, ইমেইল বা যেকোনো অনলাইন আইডি বেহাত হওয়া মানে মুহূর্তে সব একান্ত তথ্য অন্য কারো হাতে চলে যাওয়া।
এমন অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু থেকে নিরাপদ থাকতে তাই অবশ্যই যেকোনো আইডিতে সহজে অনুমান করা যায় না এমন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত। পাসওয়ার্ড হতে হবে এমন যেন কেউ তা অনুমান করতে না পারে, বা আপনার নাম, জন্মতারিখ, প্রিয় কারো নাম ইত্যাদির সাথে যেন না মিলে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকর হচ্ছে ছোট ও বড় হাতের অক্ষর, সংখ্যা ও চিহ্ন মিলিয়ে পাসওয়ার্ড দেয়া। পাশাপাশি, আপনার অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তার স্বার্থে অবশ্যই টুএফএ (সেকেন্ড ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন) ব্যবহার করুন।
প্রয়োজনীয় ফাইল ও ছবি বেহাত হওয়া প্রতিহত করতে কোনো একটি ভালো মানের ক্লাউড সার্ভিসে ব্যাকআপ রাখুন। তবে, একান্ত ছবি বা ভিডিও ফোন, কম্পিউটার বা ক্লাউড কোথাও না রাখাই সার্বিক কল্যাণের।
মোবাইল অ্যাপ ইনস্টলের সময় আমরা সাধারণত ‘টার্মস এন্ড কন্ডিশনস’ না পরেই ‘এগ্রি’ ক্লিক করি, এটি কখনোই করা উচিত নয়। শুধু তাই নয়, শেয়ার ইট বা অন্য কোনো মাধ্যমে সংগ্রহ না করে প্রয়োজনীয় অ্যাপ্লিকেশন সবসময় স্ব স্ব মোবাইল অ্যাপ স্টোর থেকে ডাউনলোড করা উচিত।
মোবাইল ফোনের যথাযথ নিরাপত্তার জন্য অবশ্যই ভালো মানের একটি মোবাইল সিকিউরিটি সফটওয়্যার ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে, ফ্রি অ্যাপ ডাউনলোড না করে বাজার থেকে দেখে-শুনে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী লাইসেন্সড ভার্সন ব্যবহার করা উচিত। এতে ফোনের কোন অ্যাপ কী কী অ্যাকসেস নিচ্ছে তা জানা ও নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি ট্র্যাকিং এবং হারিয়ে গেলে ফোনে থাকা সব ডাটা মুছে ফেলা সম্ভব হয় বলে কোন তথ্য বেহাত হওয়ার ঝুঁকি থাকে না। এছাড়াও, ঘরে-বাইরে, অফিসে বা ট্যুরে যেখানেই থাকুন না কেন সবসময় ফোন ‘লকড’ রাখুন।