১২ মে ২০১৭, শুক্রবার রাত থেকে বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১৫০টির বেশি দেশের ২,৩০,০০০ কম্পিউটার অচল করে দিয়েছে ‘ওয়ানাক্রাই’ নামের নতুন একটি র্যানসমওয়্যার। ওয়ানাক্রিপ্ট নামেও পরিচিতি পাওয়া এই ম্যালওয়্যারের আক্রমণের শিকার হচ্ছে মূলত চলতি বছরের মার্চ থেকে আর হালনাগাদ না করা মাইক্রোসফট উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমচালিত কম্পিউটার।
এই ধরণের সাইবার হামলার তালিকায় এর আগে কখনো বাংলাদেশের নাম না থাকলেও এবার একটি ব্যাংক, স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল এবং ৩০ জনের বেশি ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীর কম্পিউটার ‘ওয়ানাক্রাই’ হামলার শিকার হয়েছে বলে জানা গেছে।
ওয়ানাক্রাই এক ধরণের ম্যালওয়্যার। ভুল লিঙ্ক বা অ্যাটাচমেন্টে ক্লিক করা থেকে এটি ছড়াতে পারে। কোনো কম্পিউটারে প্রবেশ করে সেখানে সংরক্ষিত ডাটা ও ফাইল ‘এনক্রিপ্টেড’ করে ফেলাই এর কাজ। ওয়ানাক্রাই আক্রান্ত হলে ব্যবহারকারী আর নিজের কম্পিউটারে প্রবেশ করতে পারেন না, বা প্রয়োজনীয় ফাইল অ্যাকসেস করতে পারেন না। এর বদলে কম্পিউটার চালু করা হলে হ্যাকারের কাছ থেকে একটি বার্তা আসে যেখানে কম্পিউটারের অ্যাকসেস পেতে কীভাবে এবং কত ‘মুক্তিপণ’ দিতে হবে তা প্রদর্শন করা হয়।
ওয়ানাক্রাইয়ের আক্রমণে শুক্রবার বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে হাজারের বেশি কম্পিউটার-ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। রবিবার হামলার ব্যাপকতা বেড়ে ছড়িয়ে পড়ে অন্তত ১৫০টির বেশি দেশে। এখন পর্যন্ত এই হামলায় দুই লাখের বেশি কম্পিউটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে, মজার বিষয় হচ্ছে ওয়ানাক্রাই আক্রান্ত ডিভাইসপ্রতি হ্যাকার মুক্তিপণ হিসাবে মাত্র ৩০০ ডলার মুক্তিপণ দাবি করছে যা সচরাচরের তুলনায় বেশ কম! পাশাপাশি, মুক্তিপণ দেয়ার জন্য ওয়ানাক্রাইয়ের হ্যাকার ৩টি বিটকয়েন পেমেন্ট ঠিকানা দিয়ে ভিক্টিমদের কাছে বার্তা পাঠাচ্ছে।
মে মাসের ১২ তারিখ থেকে ছড়ানো শুরু হলেও ১৩ এবং ১৪ তারিখ দুই দিনে র্যানসমওয়্যারটির আরও দুটি নতুন সংস্করণ ছড়িয়েছে যা আগের চেয়েও অনেক বেশি ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতামত অনুযায়ী র্যানসমওয়্যার থেকে সুরক্ষিত থাকতে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। যাঁরা উইন্ডোজ এক্সপি ব্যবহার করছেন, তাঁরা এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছেন। এছাড়াও, উইন্ডোজ সেভেন ব্যবহারকারীদেরও নিরাপত্তা প্যাঁচ হালনাগাদ করে নেয়া উচিত এখনই। আর, পিসিতে ইতোমধ্যে র্যানসমওয়্যারের আক্রমণ হলেও হ্যাকারকে অর্থ দেয়া যাবে না কোনোভাবেই। কেননা এতে হ্যাকার উৎসাহিত হতে পারে কিংবা একই ব্যবহারকারীকে আবারও ব্ল্যাকমেইল করতে পারে। কম্পিউটারে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কোনো ফাইল না থাকলে পিসি ফরম্যাট করে অপারেটিং সিস্টেম ও ভালো মানের অ্যান্টিভাইরাসের লাইসেন্সড ভার্সন ইনস্টল করে ফুল স্ক্যান করে নিতে হবে।
র্যানসমওয়্যার থেকে সুরক্ষিত থাকতে এখানে কিছু নির্দেশনা তুলে ধরা হলো:
র্যানসমওয়্যার সংক্রান্ত জিজ্ঞাসা বা সাহায্যের জন্য দিন-রাত যেকোনো সময় যোগাযোগ করতে পারেন রিভ অ্যান্টিভাইরাস সাপোর্ট সেন্টারে: 01844079181