একবার ভাবুন তো – কম্পিউটার আপনার, তাতে রক্ষিত ফাইল আপনার কিন্তু কেউ তা ‘লক’ করে দিয়ে বললো, ছাড়াতে টাকা লাগবে! শুধু বলা না, অফিসের গুরুত্বপূর্ণ ডাটা বের করতে গিয়ে দেখলেন ওপেন হয় না, পারিবারিক ছবিও লকড – কেমন লাগবে?
সাম্প্রতিক এই সাইবার ক্রাইমের নাম ‘র্যানসমওয়্যার অ্যাটাক’। রাশিয়ায় শুরু হলেও সম্প্রতি তা ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী। বাংলাদেশেও ইতোমধ্যে র্যানসমওয়্যারের একাধিক ভিকটিম সনাক্ত হয়েছে। একবার এর শিকার হলে বিপুল পরিমাণ টাকা না দিয়ে ওই পিসির ফাইল আর উদ্ধার করা সম্ভব না বলে র্যানসমওয়্যার সম্পর্কে জানা অ সচেতন হওয়া প্রয়োজন এখনই।
র্যানসমওয়্যার কী?
এক ধরণের ম্যালওয়্যার যা গোপনে কাঙ্ক্ষিত ডিভাইসে স্থান করে নিয়ে কম্পিউটারে থাকা সব তথ্য, ছবি, ফাইল ও গেম এনক্রিপ্ট বা বিশেষ কোডে রূপান্তরিত করে। এগুলো ফের ব্যবহার উপযোগী করতে ব্যবহারকারীদের কাছে বিভিন্ন অর্থ বা অনলাইন মুদ্রা ‘বিটকয়েন’ মুক্তিপণ হিসেবে দাবি করা হয়।
এটি কীভাবে কাজ করে?
এটি মূলত ক্রিপ্টোভাইরাল এক্সটরশন নামে তিন ধাপে কাজ করে, যথা:
১. সাইবার ক্রিমিনাল একটি পাসওয়ার্ড সেট করে ম্যালওয়্যারটি অনলাইনে ছড়িয়ে দেয়।
২. ব্যবহারকারীর পিসিতে স্থান করে নিয়ে ফাইল ‘লক’ করে হ্যাকারের সেট করে দেয়া বার্তা দেখায়
৩. হ্যাকার দাবিকৃত অর্থ পেয়ে ভিকটিমকে কোডটি জানিয়ে দিলে তা দিয়ে আবার ফাইল ডিক্রিপ্ট হয়
লাভ-ক্ষতির খতিয়ান
টাকাই র্যানসমওয়্যারের মূল লক্ষ্য! একবার এর ভিকটিম হলে আর টাকা দেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না বলে সাইবার ক্রিমিনালদের জন্যও সম্প্রতি তা পরিণত হয়েছে লাভজনক উপার্জন পদ্ধতিতে!
বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে আলাদা করে র্যানসমওয়্যারের তথ্যাবলী না থাকলেও বিশ্বব্যাপী ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী:
১. হ্যাকাররা হাতিয়ে নিয়েছে ১ বিলিয়নের বেশি ইউএস ডলার
২. সবচেয়ে বেশি আক্রমণের শিকার হয়েছে চীন (৪.৯ মিলিয়ন কম্পিউটার)
৩. মাসে গড়ে ৫০,০০০ বেশি পিসিতে ছড়ায় র্যানসমওয়্যার
৪. বিশ্বব্যাপী মোট প্রতিষ্ঠানের প্রায় অর্ধেক ইতোমধ্যে র্যানসমওয়্যারের শিকার
নিরাপদ থাকতে করণীয়
র্যানসমওয়্যার থেকে নিরাপদ থাকার এখনও পর্যন্ত কোনো অব্যর্থ উপায় জানা যায়নি বলে অনলাইন এবং অফলাইন – উভয় মাধ্যমেই নিজের প্রয়োজনীয় ফাইলসমূহের ব্যাকআপ রাখা আবশ্যক। এছাড়াও, নিজের এবং একান্ত তথ্যের গোপনীয়তার জন্য কার্যকর অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করা উচিত।