ম্যালওয়্যার হচ্ছে সাইবার ক্রিমিনালদের তৈরি ক্ষতিকর প্রোগ্রাম যা তথ্য চুরি ও কম্পিউটারের ক্ষতি সাধনে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। ম্যালওয়্যার ক্ষতিকর বলার অপেক্ষা না রাখলেও এর যে নানা প্রকারভেদ আছে তা অনেকেরই অজানা। চলুন তাহলে পরিচিত হই বিভিন্ন রকমের ম্যালওয়্যারের সাথে:
স্পাইওয়্যার
নামের সাথে মিল রেখে স্পাইওয়্যারের কাজ হচ্ছে ব্যবহারকারী কী করছেন না করছেন তা লক্ষ্য রাখা। আর, এর কাছ থেকেই হ্যাকাররা পেয়ে যায় কাঙ্ক্ষিত ব্যবহারকারীর একান্ত তথ্যসমূহ। এটি সাধারণত ইন্টারনেট থেকে ফ্রি সফটওয়্যার নামানোর সময় ডাউনলোড হয়ে থাকে।
ট্রোজান হর্স
ট্রোজান সাধারণত দরকারি ফাইলের ছদ্মবেশে থাকে। কোনোভাবে একবার ক্লিক করা হলেই তা আপনার কম্পিউটারের রিমোট অ্যাকসেস পাঠিয়ে দেয় হ্যাকারের কাছে! এটা শুধু যে আপনার নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে তা নয়, পিসি ‘স্লো’ হওয়ার পেছনেও দায়ী ট্রোজান হর্স।
ভাইরাস
কম্পিউটার বা স্মার্টফোন ব্যবহার করেন কিন্তু ভাইরাসের শিকার হননি – এমন ব্যবহারকারী পাওয়া দুষ্কর। মূলত এক্সটার্নাল হার্ড ড্রাইভের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ক্ষতিকর এই প্রোগ্রাম ডিভাইসে রক্ষিত ডাটার ক্ষতিসাধনের পাশাপাশি ব্যবহৃত হয় এক পিসি/মোবাইল ফোন থেকে অন্য ডিভাইসে নিজের অনুলিপি ছড়িয়ে দেয়ার কাজে।
ওয়্যার্ম
মেইল থেকে বিস্তার লাভ করে নিজের প্রতিলিপি তৈরি করে পিসি/মোবাইল ফোন স্লো করে দেয়াসহ নানা সমস্যা সৃষ্টিকারী ওয়্যার্ম দ্রুততম সময়ে ছড়িয়ে পড়ে অকেজো করে দিতে পারে যেকোনো নেটওয়ার্ক ব্যবস্থা।
স্ক্যারওয়্যার
নামের সাথে মিল রেখে এর কাজ কেবল ভয় দেখানোই! কোনো সাইটে প্রবেশ করামাত্র এটি আপনার ডিভাইসের নাম উল্লেখ করে পপ-আপ বা ফ্লোটিং নোটিফিকেশনের মাধ্যমে তাতে অজস্র ভাইরাস আছে বা আউটডেটেড বলে তা ফিক্স করতে বলে আপনাকে দিয়ে কৌশলে অদরকারি সফটওয়্যার নামিয়ে নেয়াই এর লক্ষ্য।
অ্যাডওয়্যার
বিজ্ঞাপন দেখানোই এর কাজ। আপাতঃদৃষ্টিতে তেমন কোনো ক্ষতি না করলেও বারবার এসব বিজ্ঞাপন প্রদর্শিত হওয়ার কারণে পিসি স্লো হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি কঠিন হয়ে পড়ে দৈনন্দিন অনলাইন কার্যকলাপ।
র্যানসমওয়্যার
ভাইরাসজগতে সবচেয়ে ভয়ংকর বলে ইতোমধ্যে আখ্যায়িত র্যানসমওয়্যার দিয়ে টার্গেটের পিসি’র সব ফাইল এনক্রিপ্টেড করে শুরু হয় টাকার জন্য চাপ দেয়া। এই এনক্রিপশন সহজে ডিক্রিপ্ট করা যায় না বলে তখন আর হ্যাকারকে টাকা না দিয়ে ফাইলগুলো পুনরুদ্ধার করার আর কোনো বিকল্প থাকে না। সাম্প্রতিক সময়ে এমন বেশ কিছু ঘটনার জেরে র্যানসমওয়্যারের ঝুঁকি বিবেচনায় সকল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সতর্ক থাকা উচিত।
উল্লেখিত ম্যালওয়্যারসমূহছাড়াও ফিশিং করে হ্যাক করার হার সম্প্রতি লক্ষণীয়। এক্ষেত্রে এসএমএস, মেইল বা সামাজিক মাধ্যমে নকল লিংক ছড়িয়ে নামীদামী প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের মতো দেখতে ওয়েবপেইজ বানিয়ে টার্গেটকে সেখানে প্রবেশ করতে বলা হয়। আর এই সুযোগে হাতিয়ে নেয়া হয় ব্যবহারকারীর নাম, পাসওয়ার্ডসহ ব্যাংকিং তথ্য।
এসব ম্যালওয়্যারের ঝুঁকি থেকে নিরাপদ থাকতে নিরাপদ অনলাইন আচরণের পাশাপাশি প্রয়োজন প্রিমিয়াম মানের অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করা।