দিনশেষে দেশের বাইরে থাকা বন্ধুবান্ধবের সাথে কথা বলতে কিংবা বাইরে কোথাও ঘুরতে গিয়ে হুট করে তোলা ছবি সবার সাথে শেয়ার করার জন্য ফেসবুক ব্যবহার করেন না এমন মানুষ খুব কমই আছেন। শুধু তাই নয়, ইকমার্স থেকে শুরু করে নামীদামী সব ব্র্যান্ডের বিশেষ দিনের জমকালো অফার, এমনকি নিয়মিত মার্কেটিং এসবও এখন ফেসবুককেন্দ্রিক!
এভাবে একদিকে যেমন বিশাল জনগোষ্ঠী একে অন্যের সঙ্গে ফেসবুকে কানেক্টেড হচ্ছেন তেমনি অহরহ ব্যক্তিগত তথ্য ও ছবি ছড়িয়ে পড়ছে এখান থেকে সেখানে। পুলিশের হিসাবেও বেড়েছে ফেসবুকের মাধ্যমে সাইবার অপরাধের ঘটনা। এসবের প্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সম্প্রতি জনপ্রিয় এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে কিছু সতর্কতামূলক নির্দেশনা দিয়েছে যেখানে ৮ ধরণের তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে সচেতন থাকতে অনুরোধ জানানো হয়েছে-
১. আপনার জন্ম তারিখ :
অনেকেই নিজের জন্ম তারিখ ফেসবুকে উন্মুক্ত করে রাখেন। এটি আপনার জন্য অনিরাপদ। কারণ তথ্যপ্রযুক্তির যুগে জন্ম তারিখ থেকেই অনেক তথ্য সংগ্রহ করে হ্যাকাররা। অথবা যেকোনো শত্রু এই বিশেষ দিনে টার্গেট করে আপনার ওপর হামলা চালাতে পারে।
২. আপনার শিশু কোথায় পড়াশোনা করে :
অনেক অভিভাবক শিশুদের নিয়ে অবেগাপ্লুত হয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেন। সেই সঙ্গে স্ট্যাটাসে জানিয়ে দেন, তার শিশু কোন প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করছে। এটি শিশুর জন্য নিরাপদ নয়। এতে শিশু অপহরণের ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
৩. আপনার শিশুর ছবি :
শিশুদের নিয়ে যেকোনো তথ্য পাবলিকের কাছে শেয়ার করার বিষয়ে সবাইকে সতর্ক হতে হবে। যদিও অনেকেই শিশুদের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেন। এতে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ে।
৪. বর্তমান অবস্থান :
যেখানে সেখানে সেলফি তুলে লোকেশন ট্যাগ করে দেওয়াটা অনিরাপদ। এর মাধ্যমে যে কেউ আপনার সবশেষ অবস্থান জানতে পারে। ফলে নিরাপত্তা ঝুঁকি বাড়ে।
৫. কখন এবং কোথায় যাচ্ছি :
দেখা যায়, আমরা কখন, কোথায় যাচ্ছি কিংবা ভ্রমণে বের হচ্ছি সে বিষয়টি ফেসবুকে জানিয়ে দিই, যা মোটেও নিরাপদ নয়। হয়তো শত্রুপক্ষ আপনার এমন তথ্য পাওয়ার অপেক্ষায় ছিল।
৬. নির্দিষ্ট স্থান ট্যাগ করা :
অনেক সময় ফেসবুকে নিজের অবস্থানের নির্দিষ্ট স্থান ট্যাগ করে দেন অনেকেই। ওই সময় আপনার প্রোফাইল যে ভিজিট করবে, সে জানতে পারবে এখন আপনি কোথায় আছেন। সেটি বাসায় কিংবা অফিসে হোক। দেখা গেল, এভাবে কেউ আপনার বাসা ও অফিসের ঠিকানা সংগ্রহ করে রাখল। পরবর্তীতে সুযোগ বুঝে আপনার ক্ষতি করল। আর এজন্য ফেসবুকে লোকেশন ট্যাগ করা মোটেও নিরাপদ নয়।
৭. ফোন বা মোবাইল নম্বর :
অনেকেই মোবাইল কিংবা ফোন নাম্বার ফেসবুকে উন্মুক্ত করে রাখেন, যা সম্পূর্ণভাবে অনিরাপদ। মোবাইল বা ফোন নম্বর ব্যক্তিগত গোপনীয় জিনিস। পরিচিত ব্যক্তিদের ছাড়া কাউকে ফোন কিংবা মোবাইল নম্বর দেওয়া নিরাপদ নয়।
৮. ক্রেডিট কার্ডের তথ্য :
ক্রেডিট কার্ড হচ্ছে গোপন ও স্পর্শকাতর বিষয়। ক্রেডিট কার্ডের তথ্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া কোনোভাবেই নিরাপদ নয়। তবে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে ক্রেডিট কার্ডের তথ্য দেওয়ার প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠান কিংবা ওয়েবসাইট বুঝেই দিতে হবে। যাতে আপনার দেওয়া তথ্য তাদের কাছে সুরক্ষিত থাকে।