ডিজিটালাইজেশনকে মুদ্রার সঙ্গে তুলনা করা হলে এর এক পিঠে যেমন ইন্টারনেট সক্ষমতার সুখছবি অঙ্কিত, ঠিক তেমনি অন্য পিঠ সাইবার হামলায় কলঙ্কিত! তাই, অফিস-আদালতে কম্পিউটার আর ইন্টারনেটের ব্যবহার যত বাড়ছে সাইবার দুর্বৃত্তদেরও তত পোয়াবারো। হ্যাকাররাও এখন ঘরোয়া ব্যবহারকারীর বদলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকেই টার্গেটে পরিণত করছে বেশি – কেননা এতে একসঙ্গে অনেকের তথ্য পাওয়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবেও লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাই, কর্মীদের একান্ততার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ও অর্থনীতি সমুন্নত রাখতে সাইবার অ্যাটাক বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন এখনই।
ইতোমধ্যে সাইবার হামলার শিকার হয়ে থাকলে কীভাবে তা থেকে পরিত্রান পাবেন এবং যেভাবে সামনের দিনগুলোতে প্রতিষ্ঠানের আইটি সিকিউরিটি নিশ্চিত করবেন – তা নিয়েই আমাদের এবারের আলোচনা।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সাইবার অ্যাটাকের শিকার হলেও প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্টরা তা প্রাথমিক অবস্থায় অনুধাবন করতে পারেন না। তাই, আপনার প্রতিষ্ঠান বা আপনি যেখানে কাজ করছেন সেখানে আপনার পিসি বা মোবাইলে সাইবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনো সমস্যা উপলব্ধ হওয়ামাত্র আইটি ম্যানেজার বা অ্যাডমিনকে জানান।
প্রাতিষ্ঠানিক সাইবার নিরাপত্তায় অবশ্যই প্রতিষ্ঠানে সাইবার সিকিউরিটি এক্সপার্ট নিয়োগ দিন।
আপনার প্রতিষ্ঠান আইটিধর্মী না হোক, কিন্তু সেখানে নিয়মিত কম্পিউটারে কাজ করা হলে সাইবার নিরাপত্তায় অবশ্যই করণীয়সমূহ নিম্নরূপ:
এই ধরণের কোনো হামলা মোকাবেলায় দক্ষ সাইবার নিরাপত্তা কর্মীর পাশাপাশি আরও প্রয়োজন সুসংঘটিত লিগ্যাল ডিফেন্স সিস্টেম; কোনো হামলার ঘটনা ঘটলে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানো ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ সাপেক্ষে তা পুনরুদ্ধার করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের সাথে যোগাযোগ থাকা আবশ্যক।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৬৬% প্রতিষ্ঠান সাইবার হামলার শিকার হয় কর্মীদের ভুলে। তাই, প্রতিষ্ঠানের সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবার আগে প্রয়োজন কর্মীদের যথাযথ ট্রেনিং। পুরানো কর্মীদের স্থলে যারা আসেন তাঁদেরও ট্রেনিংয়ের আওতায় আনুন এবং সম্ভব হলে বছরে একবার তা আয়োজন করুন।
ছোট কিংবা বড় – প্রতিষ্ঠান যেমনই হোক না কেন, সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি সবসময়ই সমান গুরুত্বপূর্ণ। তাই, আপনার প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটারসহ অন্যান্য যোগাযোগ প্রযুক্তি ডিভাইস এবং সেসবে সংরক্ষিত তথ্যের নিরাপত্তায় অবশ্যই প্রিমিয়াম নিরাপত্তা সমাধান ব্যবহার করা উচিত। চূড়ান্ত ব্যবহারকারীদের জন্য অ্যান্টিভাইরাস যথেষ্ট হলেও কর্পোরেট ব্যবহারকারীদের জন্য এন্ডপয়েন্ট সিকিউরিটি ব্যবহার আবশ্যক। আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি সাইবার হামলায় প্রাতিষ্ঠানিক ও গ্রাহক তথ্য বেহাত হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে সাইবার নিরাপত্তায় সচেতন থাকতে হবে কর্মী ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সবাইকেই।