বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ – তা নিয়ে বছর দশেক আগে বিতর্কের চল থাকলেও এখন কমবেশি সবাই জানে বিজ্ঞান একইসঙ্গে আশীর্বাদ আবার অভিশাপও! সাত সমুদ্র তেরো নদীর পাড়ের কাউকে এখন আর ‘মাদার সিক, কাম শার্প’ বলে টেলিগ্রাম করে বিয়ের জন্য ডেকে আনা লাগে না। বদলে মুহূর্তে পাত্রীর যতখুশি ঝকঝকে সেলফি অ্যাটাচ করে পাঠিয়ে দেয়া যায় ফেসবুক, ভাইবার কিংবা ইমেইলে! এজন্য বাড়তি কোনো টাকা খরচ না হলেও মুদ্রার ওপিঠে যথারীতি একটু অভিশাপ আছেই – তা হলো নিরাপত্তা ঝুঁকি। মুহূর্তে বড় বড় ফাইল আদানপ্রদান যায় বলে একদিকে বহুল ব্যবহারের পাশাপাশি অ্যাটাচমেন্ট এখন হ্যাকারদেরও আক্রমণের অন্যতম প্রধান অস্ত্র।
ইমেইল সুরক্ষায় তাই এবারের পোস্টে তুলে ধরা হলো কিছু প্রয়োজনীয় টিপস:
কোনো অ্যাকাউন্ট কম্প্রোমাইজের জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় ফিশিং, মানে কৌশলে কাঙ্ক্ষিত ওয়েবসাইটের মতো নকল সাইট বানিয়ে লগইন করতে বলে ইউজার নেম আর পাসওয়ার্ড জেনে নেয়া! জেনে অবাক হবেন, এভাবে প্রতিদিন কেবল ফেসবুকেই হ্যাক হয় ৬ লক্ষেরও বেশি আইডি! তাহলে একবার ভেবে দেখুন অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, বিভিন্ন ইমেইল সেবাদাতা মাধ্যমসহ দৈনিক হ্যাক হওয়া মোট অ্যাকাউন্টের সংখ্যা কত হতে পারে? ফিশিংয়ের মাধ্যমে হ্যাকিং প্রতিহত করা কিন্তু খুবই সহজ, এজন্য বেশি কিছু না কেবল একটু সচেতনতাই যথেষ্ট। ইমেইল এলে তাতে ক্লিক করার আগে মাউসটি কেবল সেন্ডারের নামের উপর (ফ্রম চিহ্নিত ঘরে) নিয়ে যান। সেন্ডারের দেখানো নাম যদি নকলও হয়, আপনি এখানে দেখতে পারবেন আসলে তার ইমেইল অ্যাড্রেসটি কী নামে আছে। যদি পরিচিত না হয় বা @ চিহ্নের পরের অংশ সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটের নাম না থাকে তবে সেই ইমেইল না খোলাই ভালো।
ইমেইল আইডি আর সেন্ডারের নাম যদি একই হয় তাহলে তো আস্থা রাখা যায়, কিন্তু এক না হলেও যদি জানতে ইচ্ছে করে কী আছে ইমেইলে? তবে, আপনার জন্য আরও দুটি সতর্কতা-
কী আছে তা তো অবশ্যই দেখবেন, তবে তার আগে একবার চোখ বুলিয়ে নিন সাবজেক্ট লাইনে। যদি ইনভয়েস হয়, তবে একবার ভেবে দেখুন আসলেই কিছু অর্ডার করেছিলেন কি না? যদি অর্ডারই না করেন, প্রোডাক্ট আসবে কোথা থেকে, বলুন!
ফিশিং ইমেইল চেনার আরেক উপায় হচ্ছে সিগনেচার যাচাই: যিনি মেইলটি পাঠিয়েছেন তাঁর নাম, পদবী, প্রতিষ্ঠানের নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর এবং ওয়েবসাইট অ্যাড্রেস এসব মেইলের নিচে দেয়া আছে কি না তা যাচাই করে দেখা।
মেইলে যদি কোনো লিংক সংযুক্ত থাকে, তবে তাতে ক্লিক করার আগেও একবার মাউসটি লিংকের উপর নিয়ে যান। ক্লিক বা কিছুই করা লাগবে না, কেবল মাউসের পয়েন্টারটি লিংকে নিয়ে গেলেই হবে। দেখুন একই ঠিকানা দেখাচ্ছে কি না?
উল্লিখিত সতর্কতাসমূহ অবলম্বনের পাশাপাশি অনলাইনে সার্বক্ষণিক নিরাপদ থাকতে অবশ্যই ইমেইল সিকিউরিটি সংযুক্ত আছে এমন প্রিমিয়াম মানের যেকোনো ইন্টারনেট সিকিউরিটি ব্যবহার করা উচিত।