বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি ১০০ জনে মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন ৮৩ জন, আর এই বিশাল সংখ্যক মুঠোফোন ব্যবহারকারীর ৮০ শতাংশই ব্যবহার করেন অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমচালিত স্মার্টফোন। ল্যাপটপ ও ডেস্কটপ কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা ক্ষতিকর প্রোগ্রাম তথা ভাইরাস ও ম্যালওয়্যার থেকে সুরক্ষায় অ্যান্টিভাইরাস বা বিভিন্ন নিরাপত্তাবিধি মেনে চললেও মোবাইল ফোনের নিরাপত্তা বিষয়ে বেশীরভাগই কমবেশি উদাসীন।
ফেসবুকে হালনাগাদ থেকে শুরু করে প্রাত্যাহিক যোগাযোগ ও দাপ্তরিক কাজকর্ম সবকিছুই এখন মোবাইল ফোননির্ভর। বিটিআরসি’র সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ীও অক্টোবর-২০১৬ পর্যন্ত দেশে মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৬ কোটি ৩৯ লক্ষ ৬৫ হাজার, যার সিংহভাগ তথা ৬ কোটি ৩০ লক্ষ ৭০ হাজার মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারী। সার্বিক বিবেচনায় দেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর ক্রমবর্ধমান সংখ্যার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে মোবাইল ফোনে ঝুঁকির পরিমাণও। তাই, বহুল ব্যবহৃত অ্যান্ড্রয়েড সিকিউরিটির জন্য এবারের পোস্টে তুলে ধরা হলো কার্যকর কিছু নিরাপত্তা টিপস:
স্বয়ংসম্পূর্ণ অপারেটিং সিস্টেম হিসাবে অ্যান্ড্রয়েডের রয়েছে নিজস্ব নিরাপত্তা বলয়, কেউ যেন অজান্তে আপনার ফোন ব্যবহার করতে না পারেন তাই পাসওয়ার্ড বা ফিঙ্গারপ্রিন্টের ব্যবহারের পাশাপাশি কোনো কারণে ফোন হারালে বা চুরি হলেও তথ্যের নিরাপত্তার জন্য এনক্রিপশন ব্যবহার করুন।
যখন কিছু করছেন না, তখন তা ‘লক’ করে রাখাই ভালো, অ্যান্ড্রয়েডে সাধারণত আনলকিংয়ের জন্য তিনটি অপশন থাকে-
এছাড়াও, আধুনিক স্মার্টফোনগুলিতে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানিং এর ব্যবস্থা থাকে যা অল্প আয়াসে অধিক সুরক্ষা নিশ্চিত করে।
ফেসবুক বা হোয়াটসঅ্যাপের মতো কিছু অ্যাপ্লিকেশন আছে যেসবে আপনার একান্ত বা গোপনীয় তথ্য, ছবি ইত্যাদি থাকতে পারে; তাই এসবের নিরাপত্তার স্বার্থে অবশ্যই ভালো মানের অ্যাপ লকার ব্যবহার করা উচিত।
মোবাইলে কোনো অ্যাপ ইনস্টলের সময় সাধারণত ‘কী’ পারমিশন চাইছে তা যাচাই না করেই সম্মতি দিয়ে দেয়া হয়, এটি যেকোনো সময় বড় ধরণের হুমকির কারণ হতে পারে। এমন অনেক অ্যাপ বা গেম আছে যা যুক্তিসংগত কোনো কারণ ছাড়াই আপনার মাইক্রোফোন বা ক্যামেরা ব্যবহারের অনুমতি চায়। একবার ভাবুন তো ওই অ্যাপের পিছনে যদি কোনো হ্যাকার থাকেন, তবে কী হতে পারে? ওই অ্যাপ্লিকেশন চালনার সময় আপনি কী বলছেন বা করছেন সবই শুনতে বা দেখতে পাবেন তিনি! তাই, নতুন কোনো অ্যাপ ইনস্টলশেষে অবশ্যই এর পারমিশন চেক করুন এবং যেসব অসঙ্গত বলে মনে হবে, বাতিল করে দিন।
মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের হ্যাকিংয়ের সবচেয়ে সহজ উপায় ফ্রি ওয়াইফাই। তাই, আপনার একান্ত তথ্য ও গোপনীয়তা রক্ষার জন্য অবশ্যই ফ্রি ওয়াইফাই এড়িয়ে চলুন।
ফোনের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থার পাশাপাশি সম্পূর্ণ নিরাপদ থাকতে অবশ্যই প্রিমিয়াম মানের মোবাইল সিকিউরিটি অ্যাপ ব্যবহার করা উচিত। ভালো মানের মোবাইল অ্যান্টিভাইরাস যেকোনো ক্ষতিকর অ্যাপ থেকে সুরক্ষার পাশাপাশি হারিয়ে গেলেও ডিভাইস ট্র্যাকিংসহ মোবাইল ফোন থেকেই আপনার বাসার বা অফিসের পিসি নিয়ন্ত্রণের সব সুবিধা দেবে।