বেশ চলছিল সোশ্যাল মিডিয়া ব্রাউজিং, কখনো কখনো ইমেইল আদান-প্রদান এবং খবর আর মুভি দেখার মতো টুকিটাকি অনলাইন কাজকর্ম। কিন্তু, বিধিবাম! হুট করে একদিন দেখা গেল কোনোভাবেই আর লগইন করা যাচ্ছে না সাধের ফেসবুক অ্যাকাউন্টটিতে, কিংবা কম্পিউটারের প্রতিটি ড্রাইভে অচেনা অসংখ্য ফাইল আর ফোল্ডার। টেক সেভি কিংবা শখের ব্যবহারকারী – যে কারো ক্ষেত্রেই ঘটতে পারে এমন ঘটনা। খুব বড় কোনো কারণ নয়, সাধারণ ছোটখাটো কিছু ভুল থেকেই এমনটা হতে পারে। অনলাইনে নিয়মিত করা এমন ৬ ধরণের ভুল নিয়েই আমাদের এবারের আয়োজন।
কম্পিউটারে বা মোবাইলে কাজ করার সময় হরহামেশাই আমরা ‘ক্লিক’ করি। কখনো এক ক্লিকে কাজ না করলে বিরক্ত হয়ে বারবার ক্লিক করতে থাকি এটা না বুঝে যে নিশ্চয়ই কোনো কাজ চলমান আছে আর তা শেষে স্বয়ংক্রিয়ভাবেই পরের কাজ শুরু হবে। আবার মেইলে আসা লিংক কিংবা ফেসবুকের হোমপেজ স্ক্রল করতে করতে চটকদার কিছু চোখে পড়লেও আমরা ক্লিক করি। এক্ষেত্রে কখনো কখনো আমরা শিকার হই ক্ষতিকর প্রোগ্রাম তথা ভাইরাসের। তাই, কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনে ক্লিক করার ক্ষেত্রে একটু সচেতন থাকা উচিত। সাধারণ কাজ করার সময় ক্লিক করে কিছু সময় অপেক্ষা করে কাজটি শুরু হয় কি না দেখা যেতে পারে। আর, মেইলে আসা কিংবা সোশ্যাল সাইটে পাওয়া লিংক ক্লিক করার আগে তা কতটুকু বিশ্বস্ত তা ভেবে দেখা উচিত।
অনলাইন নিরাপত্তার প্রথম শর্ত শক্তিশালী ও অননুমানযোগ্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার। তাই, ইমেইল কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া যেখানেই অ্যাকাউন্ট থাকুক না কেন অবশ্যই আনকমন ও কঠিন পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা উচিত। মনে রাখবেন, পাসওয়ার্ডে কখনোই নিজের বা কাছের কারো নাম, জন্মতারিখ, ফোন নম্বর ইত্যাদি সেট করবেন না ও কখনোই ভিন্ন ভিন্ন অ্যাকাউন্টের জন্য একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না।
ফ্রি ওয়াইফাই শুনতে ও ব্যবহারের সুযোগ পাওয়া অনেক আকর্ষণীয় হলেও অনেক ক্ষেত্রে এটাই আপনার একান্ত তথ্য, ছবি ও অবস্থান ফাঁস হওয়ায় অন্যতম কারণ। তাই বড় হোটেল, রেস্টুরেন্ট কিংবা কোনো প্রতিষ্ঠানে গিয়ে অথবা এর আশেপাশে অবস্থানকালীন ফ্রি ওয়াইফাই পেলেও ব্যবহারের আগে সংশ্লিষ্ট কাউকে জিজ্ঞাসা করে নিশ্চিত হয়ে নিন।
ধরা যাক, খুব দরকারি একটি সফটওয়্যার খুঁজছেন – সচারচর ডাউনলোড করেন এমন ওয়েবসাইটে পেলেন না। হুট করে দেখলেন এমন একটি সাইটে এই সফটওয়্যারটি আছে, যার নাম আগে কখনো শোনেননি। কী করবেন? অভিজ্ঞতা বলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এখানে কাঙ্ক্ষিত সফটওয়্যারটি তো পাবেন না, বরং এমবি’র অপচয় ঘটিয়ে যা নামাবেন তা ম্যালওয়্যার! মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রেও গুগল প্লে স্টোর, আই টিউনস বা উইন্ডোজ স্টোর ছাড়া অন্য কোনো সাইট থেকে অ্যাপ না নামানোই শ্রেয়।
অনেকেই এমবি খরচ কমাতে কম্পিউটারের উইন্ডোজ ও মোবাইল ফোনের সিস্টেম অটো-আপডেট বন্ধ রাখেন। এটি আরেকটি বড় ভুল। সাম্প্রতিক র্যানসমওয়্যার অ্যাটাকের ক্ষেত্রে দেখা গেছে যেসব কম্পিউটারে ওএস আপডেট দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল কেবল সেসব কম্পিউটারই আক্রমণের শিকার হয়েছে। শুধু ওএস না, নিয়মিত ব্যবহার করেন এমন সব সফটওয়্যার ও অ্যাপও অবশ্যই নিয়মিত আপডেটেড রাখুন।
জেনে কিংবা না জেনে অনেকেই কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনে অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করেন না। অনেকে আবার নির্দিষ্ট কোনো অপারেটিং সিস্টেমে অ্যান্টিভাইরাস প্রয়োজন হয় না বলেও মনে করে থাকেন। এটি যে কোনো সময় অনলাইন প্রাইভেসির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। আপনার ডিভাইস ও তাতে রক্ষিত ডাটার নিরাপত্তার জন্য তাই অবশ্যই আপনার কম্পিউটার ও মোবাইল ফোনে অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন।