অনেকসময় এমন হয় না কম্পিউটার বা মোবাইল থেকে কোনো ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় হুট করে ‘নিষিদ্ধ’ বিজ্ঞাপন, সিস্টেম স্লো বা এধরণের সতর্কবার্তা প্রদর্শন করে কিংবা কোনো গান বা ভিডিও খুঁজতে গেলে ভিন্ন ফরম্যাটের ফাইল দেখায় এবং নিজ থেকে ডাউনলোড হতে শুরু হয়? মূলত অনলাইন প্রাইভেসি নষ্টের শিকার হয়ে এমনটা ঘটে থাকে।
বিজ্ঞাপন হচ্ছে অনলাইন প্রাইভেসি নষ্ট করার মূল হাতিয়ার। আপাতঃ নিরীহদর্শন এসব বিজ্ঞাপন আপনার কোনো ক্ষতি করছে মনে না হলেও একবার কোনোভাবে ক্লিকড হলেই এই সর্বনাশের শুরু! কম্পিউটারে নিজে নিজে স্পাইওয়্যার ইনস্টল করা থেকে শুরু করে ফোন রুট করা ও সিস্টেম এক্সেস যেমন ডিভাইসের ফাইল রিড, রাইট কিংবা রিরাইট, সব ক্ষমতাই আছে এসব ‘গোবেচারা’ বিজ্ঞাপনের।
মজার বিষয় এই যে আপনি এসব অ্যাডে ক্লিক না করলেও কিন্তু যারা এসব ছড়ায় তাদের কোনো ক্ষতি নেই – কারণ, তারা ঠিকই বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় স্রেফ আপনি পকেটের পয়সায় কেনা এমবি খরচ করে এসব বিজ্ঞাপন ‘দেখেন’ বলে।
অনুপাতে কম কিন্তু আরেক ভয়াবহ ওয়্যার – এসএমএস ট্রোজান। যদি জিজ্ঞাসা করা হয়, অনলাইনে নিরাপদ থাকার সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি কোনটি – যেকেউ বলবে ‘টু স্টেপ ভেরিফিকেশন’ তথা দুই ধাপ নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা। এতে কোনো কারণে হ্যাকার আপনার কোনো অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড জানলেও তাতে প্রবেশ করতে পারবে না, যতক্ষণ না পাসওয়ার্ড দেয়ার পর আপনার মোবাইলে আসা তাৎক্ষণিক প্রবেশ সংখ্যাটি কেউ জানতে পারছে। শুনে অবাক হবেন যে এসএমএস ট্রোজান-এর কাজই হচ্ছে ভিক্টিমের মোবাইলে এসএমএস আসামাত্র তা আগে থেকে সেট করে রাখা নম্বরে ফরোয়ার্ড করা!
মানে বুঝতেই পারছেন – পাসওয়ার্ড চেঞ্জ থেকে শুরু করে ব্যাংকের এসএমএস বা কেউ যেন আড়ি পাততে না পারে ভেবে কাউকে এসএমএস পাঠিয়ে জানাতে বলা কোনো কথা- সবকিছুই এখন চাইলে জানতে পারছে হ্যাকাররা।
এই ম্যালওয়্যার সাধারণত আসে সিস্টেম বা র্যাম স্লো হয়ে গেছে শীর্ষক সতর্কতা, ব্যাটারির ক্ষমতা বাড়ানোর টিপস বা সাজেস্টেড অ্যাপ, কোনো গান বা ভিডিও’র খোঁজ করলে হুবহু সেই ফাইলটির নামে অন্য ফরম্যাটের ফাইলসহ অটোমেটিক ডাউনলোড হওয়া সফটওয়্যার থেকে। তাই এসবে ক্লিক করার আগে ঠিকঠাক জেনে-বুঝে ক্লিক করুন।
মনে রাখবেন, আপনার ডিভাইসের অপারেটিং সিস্টেমের কোনো নতুন ভার্সন যদি এসেও থাকে, আর আপনি যদি তা ব্যবহার করতে সক্ষম হয়ে থাকেন তবে তা অবশ্যই নিজে নিজেই আপডেটেড হবে (সেক্ষেত্রে আপনাকে কেবল ওয়াইফাই যংযুক্ত হতে অনুরোধ জানাবে, এর বেশী কিছু নয়)। কিংবা, আপনার মোবাইলে বা ট্যাবে যে ব্যাটারিটি দেয়া আছে – সেটি যেভাবে সর্বোচ্চ কাজ করতে পারবে কোম্পানি নিজে থেকেই সেভাবে সেট করে দিয়েছে। নতুন ব্যাটারি কেনা ব্যতীত কোনো সফটওয়্যার দিয়েই তাঁর ক্ষমতা আর বাড়ানো সম্ভব নয়।
তাই, ইন্টারনেটে থাকাকালীন এ ধরণের কোনো সতর্কতা দেখলে মনে রাখবেন বিষয়টি স্রেফ ধোঁকা, ফাঁদে পা দেবেন না।
এক্ষেত্রে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হচ্ছে তাৎক্ষণিকভাবে ওই পেজটি কেটে দেয়া, না পারলে হোম বাটন প্রেস করে বেরিয়ে যান। পরে আবার ব্রাউজার ওপেন করে গুগল বা আস্থাভাজন ওয়েবসাইট অ্যাড্রেস নিজে টাইপ করে প্রবেশ করে ইন্টারনেট ব্যবহার শুরু করুন। অনেক সময় কোনো ওয়েবসাইটে প্রবেশ করামাত্র নিজ থেকে কিছু ফাইল ডাউনলোড শুরু হয়ে যায়। এক্ষেত্রে অস্থির হওয়ার কিছু নেই। ডাউনলোডশেষে ফাইল ম্যানেজার অপশনে গিয়ে ফাইলটি খুঁজে বের করে ডিলিট করে অবশ্যই তাৎক্ষণিক ডিলিট করে দিতে হবে। সাবধান, ফাইলটি ভুলেও খুলে দেখতে যাবেন না!