২০১৬ সালের প্রথমার্ধের জন্য নকিয়া প্রকাশিত থ্রেট ইন্টেলিজেন্স রিপোর্ট অনুযায়ী মোবাইল ফোনে ম্যালওয়্যার আক্রমণের হার বেড়েছে আগের তুলনায় ৯৬%! বলার অপেক্ষা রাখে না এই আক্রমণের শিকার সিংহভাগই অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমচালিত মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী।
যোগাযোগ ব্যবস্থা যত মোবাইল ফোনকেন্দ্রিক হচ্ছে, ততই সাইবার অপরাধীদের চরম আরাধ্যে পরিণত হচ্ছে। হ্যাকিংয়ের জন্যও তাই মোবাইল ফোন এখন অন্যতম প্রধান অবলম্বন। শুধু ফোনে সংরক্ষিত তথ্য ও ছবি বেহাত হওয়াই নয়, মোবাইল ম্যালওয়ারের কারণে সম্পূর্ণভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে নিত্য প্রয়োজনীয় এই ডিভাইস।
যেভাবে বুঝবেন ম্যালওয়্যার অ্যাটাক
অনেকটা নীরব ঘাতক হলেও কিছু বৈশিষ্ট্য থেকে মোবাইল ফোনে ম্যালওয়্যার সংক্রমণ চিহ্নিত করা যায়, যা এখানে তুলে ধরা হলো:
নিজে নিজে ব্যালেন্স কমে যাওয়া
মোবাইল ম্যালওয়্যার সংক্রমণে হুট করে মোবাইল বিল বা খরচ বেড়ে যায়। এতে অনেক সময়ই অ্যাকাউন্ট থেকে নিজে নিজে ব্যালেন্স কমে যায়। ২০১২ সালে চিহ্নিত ‘স্প্যাম সোলজার’ নামক স্প্যামিং বটনেট এর একটি উদাহরণ। টার্গেটকৃত ভিক্টিমের কাছে ‘ফ্রি গেমস ডাউনলোড অফার’ শীর্ষক এসএমএস পাঠিয়ে আক্রমণ করা এই ম্যালওয়্যার নিজে থেকে কন্টাক্টের বিভিন্ন নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে প্রতিলিপি তৈরি করে।
দ্রুত ব্যাটারি/চার্জ শেষ হওয়া
কোনো কারণ ছাড়াই হুট করে যদি দেখেন ফোনের ব্যাটারি/চার্জ দ্রুত শেষ হতে শুরু করেছে, তবে সচেতন হোন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এটি ম্যালওয়্যারের জন্যই হয়ে থাকে। ম্যালওয়্যার সাধারণত ব্যাকগ্রাউন্ডে কাজ করে বলে মোবাইল ফোনের ব্যাটারি/চার্জ দ্রুত শেষ হয়ে যায়।
ডিভাইস হ্যাং
ঘন ঘন ডিভাইস হ্যাং হওয়াও ম্যালওয়্যার সংক্রমণের লক্ষণ। নিয়মিত কার্যক্রমের বাইরেও ম্যালওয়্যার এক বা একাধিক প্রোগ্রাম রান করে বলে এই হ্যাংয়ের ঘটনা ঘটে থাকে।
নিরাপদে থাকার কৌশল
ম্যালওয়্যার আক্রমণের শিকার থেকে নিরাপদ থাকতে কার্যকর কৌশলসমূহ নিম্নরূপ:
যেকোনো অ্যাপ ডাউনলোড করবেন না
ম্যালওয়্যার থেকে নিরাপদ থাকার সবচেয়ে কার্যকর কৌশল হচ্ছে কেবলমাত্র বিশ্বাসযোগ্য উৎস থেকে প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার বা অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করা। মিউজিক, মুভি, গেমস বা যে অ্যাপই হোক না কেন অ্যান্ড্রয়েডের ক্ষেত্রে ‘গুগল প্লে স্টোর’, আইওএসে ‘অ্যাপ স্টোর’ বা উইন্ডোজে ‘স্টোর’ গ্যালারিতে না পাওয়া গেলে থার্ড পার্টি বা ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা উচিত নয়।
ওএস আপডেট-এর বিকল্প নেই
সামান্য কিছু এমবি বাঁচাতে গিয়ে অনেকেই মোবাইল ফোনের অপারেটিং সিস্টেম আপডেট দেন না, যা ম্যালওয়্যার আক্রমণসহ ডেকে আনতে পারে সমূহ ক্ষতির সম্ভাবনা। তাই, ভাইরাস ও হ্যাকারের হাত থেকে নিরাপদ থাকতে অবশ্যই সবসময় আপডেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে।
ব্যবহার করুন মোবাইল অ্যান্টিভাইরাস
কম্পিউটারের মতোই মোবাইল ফোনের সুরক্ষায়ও অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করা আবশ্যক। অ্যান্টিভাইরাস কেবল ম্যালওয়্যার বা ক্ষতিকর প্রোগ্রাম থেকে সুরক্ষাই দেয় না, পাশাপাশি নিশ্চিত করে সর্বোচ্চ পারফরমেন্স ও অ্যান্টি-থেফটসহ প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সুবিধা। তাই, মোবাইল ফোনের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে অবশ্যই কোনো প্রিমিয়াম অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন।