ধরুন, রাত জেগে করা অফিসের কোনো গুরুত্বপূর্ণ ফাইল সকালে দেখলেন ‘নাই’ হয়ে গেছে! কেমন লাগবে? নিশ্চয়ই দুঃস্বপ্নের মতো মনে হবে সব!
অনেক সময়ই এমনটা ঘটে। দেখা যায় কাজের সময় বিশেষ কোনো ফাইল খুঁজে পাওয়া যায় না, বা পেলেও দেখায় তা অপরিচিত কোনো ফরম্যাটে বদলে গেছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভাইরাসের আক্রমণের ফলে এমনটা হয়ে থাকে।
ভাইরাসের আক্রমণ ঠেকাতে সবার আগে জানা প্রয়োজন – ভাইরাস কীভাবে আক্রমণ করে?
- ফিশিং ইমেইল
আপনি জিমেইল, ইয়াহু, আউটলুক বা যে মাধ্যমই ব্যবহার করেন না কেন নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন মাঝে মাঝে কিছু প্রমোশনাল ইমেইল চলে আসে ইনবক্সে। সাধারণত, এসব মেইলের সাথে সংযুক্ত ফাইল ও লিংকে আগে থেকেই সেট করা থাকে ক্ষতিকর ফাইল ও প্রোগ্রাম, তথা ভাইরাস! মূলত মেইলে থাকা ফাইল বা ওয়েবলিংকে ক্লিক করলেই বেশিরভাগ ভাইরাস প্রবেশ করে।
সতর্কতা: অপরিচিত আইডি থেকে আসা মেইল না খোলাই ভালো। প্রেরকের সম্পর্কে জানতে সেন্ডার নেমের উপর মাউস নিলে তার/প্রতিষ্ঠানের ইমেইল আইডি দেখাবে। এখান থেকে পরিচয় নিশ্চিত হয়ে ও ইমেইলের বিষয়বস্তু দেখে ইমেইল খুললে মেইল এটাচমেন্টের মাধ্যমে ভাইরাসের আক্রমণের শিকার হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
- ক্ষতিসাধনকারী ওয়েবসাইট
ইন্টারনেটের জগতে এমন অনেক ওয়েবসাইট আছে (বিশেষত: অ্যাডাল্ট, গেমিং, এন্টারটেইনমেন্ট ও ডেটিং সাইটসমূহ) যেসবে অবস্থানকালীন নিজে থেকে বিভিন্ন অ্যাডওয়্যার ও ক্ষতিকর প্রোগ্রাম ইনস্টল হয়। কোনো সাইটে প্রবেশের পর যদি দেখেন একের পর এক পপ-আপ আসছেই তবে দ্রুত তা ত্যাগ করাই ভালো।
সতর্কতা: ওয়েব সিকিউরিটি আছে এমন কোনো প্রিমিয়াম অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করুন ও কোনো সাইটে প্রবেশের ক্ষেত্রে ব্রাউজার সতর্কবার্তা দেখালে তা অমান্য করে ওই সাইটে প্রবেশ না করাই ভালো।
- ক্ষতিগ্রস্ত বুট ডিস্ক
অনেক সময়ই আমরা হার্ড ড্রাইভে ব্যাড সেক্টর আছে জেনেও তা গ্রাহ্য করি না। আবার কখনো কখনো ডিভাইস চলতে চলতে আটকে গেলে বা বন্ধ হয়ে গেলে ‘রিস্টার্ট’ দিয়ে আবার কাজ শুরু করি – এটা কখনোই করা উচিত নয়। কেননা, এতে ভাইরাস আরও বেশি অংশে ছড়িয়ে পড়ে।
সতর্কতা: হার্ড ডিস্ক সংযোজনের সময় তা নতুন/ত্রুটিমুক্ত কি না তা দেখে নেয়ার পাশাপাশি নিয়মিত ডিফ্রেগমেন্ট ও স্ক্যান করতে হবে।
- ফ্রিওয়্যার
বিশেষ কোনো গান, মুভি বা সফটওয়্যার পেতে আমরা মাঝে মাঝে মরিয়া হয়ে যাই, এতোটাই যে কখনো কখনো ডিভাইসের বা নিজের নিরাপত্তার কোথাও ভুলেও যাই! অনেক গেমিং ও গান বা মুভি ডাউনলোড করার ফ্রি সাইট এই সুযোগ নিয়ে তাদের কাছ থেকে নামানো কনটেন্টে ভাইরাস সংযুক্ত করে দেয়।
সতর্কতা: ফ্রি কোনো কনটেন্ট ডাউনলোড করতে হলেও দেখে-শুনে যাচাই করে নামানো উচিত, অন্তত যে সাইট থেকে নামাচ্ছেন তা কতটুকু জনপ্রিয় ও রিভিউ কেমন তা দেখে নিন।
- ইউএসবি ড্রাইভ
ভাইরাস সংক্রমণের উল্লেখযোগ্য আরেক উৎস ইউএসবি ড্রাইভ। রোজই আমরা ফোন চার্জ দেয়া থেকে শুরু করে পেনড্রাইভে ফাইল আদানপ্রদানে পিসিতে ইউএসবি ড্রাইভ সংযুক্ত করি। এসময়ও ভাইরাস এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে ছড়িয়ে পড়ে।
সতর্কতা: ইউএসবি ড্রাইভ ব্যবহারের ক্ষেত্রে অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম ব্যবহারের কোনো বিকল্প নেই। ভালো মানের অ্যান্টিভাইরাস পিসিতে ইউএসবি ড্রাইভ সংযুক্ত করামাত্র তা স্ক্যান করে ক্ষতিকর কিছু আছে কি না – তা জানাবে ও ক্ষতিকর কোনো ফাইল বা প্রোগ্রাম থাকলে সতর্ক করে দেবে।