21
Jun, 2018


কম্পিউটার আছে কিন্তু তাতে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন না – অন্তত এই সময়ে এসে এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বাদবাকি সব খোঁজাখুঁজি, সোশ্যাল মিডিয়া বা মুভি/গান ডাউনলোডের কথা ছেড়েও কেবল যদি অনলাইন শপিং-এর কথাই বলি ২০১৫ সালে আগের বছরের তুলনায় এর হার বেড়েছে ২১%! সবই ঠিক আছে, কিন্তু এই যে কম্পিউটার থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন কখনো ভেবে দেখেছেন কি এটি কতটা নিরাপদ?

মূল্যছাড়ের অফার সংবলিত মেইল এটাচমেন্ট কিংবা লিংক দেখেই ক্লিক করা ওয়েবসাইট ভিজিট করামাত্র ক্ষেত্রবিশেষে সেখান থেকে আপনার পিসিতে ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে। নিজে থেকে চালু হতে সক্ষম এসব প্রোগ্রাম অনেক ক্ষতিকর এবং এর ফলে আপনার কম্পিউটার স্লো বা ক্রাশড হতে পারে। শুধু তাই নয়, এসব ভাইরাস আপনার কম্পিউটারে সংরক্ষিত ফাইল বা তথ্য হ্যাকারের কাছে পাচার বা অন্য কোথাও প্রকাশ করতে সক্ষম। এটা কখনও কখনও দুঃস্বপ্ন হয়ে দাঁড়াতে পারে বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে আপনার সিস্টেমের পারফরমেন্স।

কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের জন্য এখানে তুলে ধরা হলো অনলাইনের ফাঁদসমূহ:

কম্পিউটার ব্যবহার করেন কিন্তু ‘ভাইরাস’ এর নাম শুনেননি এমন মানুষ খুব কমই আছে। কিন্তু, ভাইরাসের আক্রমণ কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে, সে বিষয়ে কি সবার ধারণা আছে! চলুন দেখে নেই-

সম্প্রতি বেশ সুনামধন্য একটি কোম্পানির কর্মীরা ‘ক্রিপ্টোলকার’ নামে একটি ভাইরাসের শিকার হয়েছেন। এর সূচনা ঘটেছিল ইমেইলে এটাচড একটি ফাইলে ক্লিক করা থেকে। অক্টোবর ২০১৩’তে ক্লিক করা ভাইরাসটি কাজ শুরু করে এবং নেটওয়ার্কের সব ফাইলই একপর্যায়ে এনক্রিপ্টেড (বিশেষ ব্যবস্থায় লকড) হয়ে যায়। পরবর্তীতে, ম্যালওয়্যারটি থেকে বার্তা প্রদর্শন করা হয় যে ফাইলগুলি ডিক্রিপ্ট করতে চাইলে হ্যাকারকে ৩০০ ডলার দিতে হবে। কেবলমাত্র অ্যান্টিভাইরাস প্রোগ্রাম ব্যবহার না করার ফলে উক্ত কোম্পানিকে এই ভোগান্তির মুখোমুখি হতে হয়েছিল।

ইন্টারনেটের জগতে আসলে কিছুই গোপনীয় নয়, এখানে সার্বক্ষণিক কেউ না কেউ আপনার দিকে নজর রাখছে। আপনি যা পড়ছেন, করছেন এমনকি লিখছেন – সবই আপনার অজ্ঞাতে জমা হচ্ছে অন্য কোথাও। হ্যাকার সেখান থেকে প্রয়োজনমাফিক টুকে নিচ্ছে আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ও পছন্দ/অপছন্দ। এ ধরণের তথ্য পাচার রোধ কিংবা একবার চুরি যাওয়া তথ্য আর ফিরে পাবার কোনো উপায় নেই নেই বলে সচেতন হওয়া প্রয়োজন শুরু থেকেই।

নজরদারির জন্য হ্যাকারদের আরেকটি বড় অস্ত্র অ্যাডওয়্যার। বিভিন্ন সাইট ব্রাউজ করার সময় প্রায়ই ভেসে আসা পপ-আপ অ্যডগুলো এই অস্ত্রের ট্রিগার! আগ্রহবশত কিংবা মনের ভুলে কোনো ব্যবহারকারী ক্লিক করামাত্র কিছু বিজ্ঞাপন টার্গেটের পিসিতে ভাইরাসাক্রান্ত ফাইল ডাউনলোড চালু করে দেয়। ফাইল এক্সিকিউট করা হলে ভাইরাসের আক্রমণ শুরু হয় এবং তা ব্যবহারকারীর পিসিতে সংরক্ষিত তথ্য ও ফাইল হ্যাকারের কাছে পাঠাতে শুরু করে।

ব্যবহারকারীর কাছে ইমেইলের মাধ্যমেও ভাইরাসের আক্রমণ হতে পারে। ইমেইল অ্যাটাচমেন্টে ওয়্যার্ম যুক্ত করে এই আক্রমণ করা হয়।

অনলাইনে নজরদারির আরেক টুল ট্রোজান যা সাধারণত দরকারি ফাইলের ছদ্মবেশে থাকে। কোনোভাবে একবার ক্লিক করা হলেই তা ডিভাইসের রিমোট অ্যাকসেস হ্যাকারের কাছে পাঠিয়ে দেয়!

অনলাইনের আরেক আতঙ্কের নাম ফিশিং। বহুল ব্যবহৃত ও জনপ্রিয় ওয়েবসাইটের আদলে নকল পেজ সাজিয়ে সেখানে লগইন করতে উৎসাহিত করে ইউজার নেম, পাসওয়ার্ড বা ব্যাংকিং ডিটেইল হাতিয়ে নেয়ার নাম ফিশিং।

হ্যাকারদের আরেকটি অস্ত্র ডাটা টেম্পারিং। এ পদ্ধতিতে আপনার প্রবেশকৃত সাইটে হ্যাকার বদলে কিংবা মুছে দেয় আপনার দেয়া তথ্য, ফাইল ইত্যাদি। প্রয়োজনীয় তথ্য ও ফাইল মুছে বা বদলে দেয় বলে কর্পোরেট বা প্রাতিষ্ঠানিক ক্ষেত্রে এর ফলাফল অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হয়ে থাকে।

ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য আরেকটি আতঙ্ক স্পাইয়িং। অনিরাপদ পিসি থেকে অনলাইনে প্রবেশ করলেই নজর রাখা হয় সে ব্যবহারকারীর উপর। ব্যক্তিগত সবকিছু এতে প্রকাশিত হয়ে যায় বলে বড় ধরনের ক্ষতি ডেকে আনা ছাড়াও এটি ব্যবহারকারী সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়াতে পারে।

The Author

Abhijeet Guha

Abhijeet is an active blogger with decent experience in the IT Security industry. He researches on various topics related to cyber security and pens down his research in the form of articles & blogs. You can reach him at abhijeet@reveantivirus.com.
Abhijeet Guha
  Leave a Comment
Search for: