অনলাইনে যৌন হেনস্থা: শিশুদের নিরাপদ রাখতে করণীয়

সাম্প্রতিক জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের ৪৯% স্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীই সাইবার বুলিং-এর নিয়মিত শিকার। সাইবার বুলিংয়ের সিংহভাগজুড়েই আছে যৌন হয়রানি। ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে– দেশের তিন-চতুর্থাংশ নারীই এমন সাইবার নিপীড়নের শিকার। এঁদের মধ্যে মাত্র ২৬% অনলাইনে হেনস্তার বিষয়টি প্রকাশ্যে এনে অভিযোগ করেন, এবং অন্যরা সামাজিকতার ভয়ে গোপন রাখেন।

এমন হয়রানি থেকে কোমলমতি শিশুদের রক্ষা করতে সবার আগে সচেতন হতে হবে বাবা-মায়েদের।

শিশুদের নিরাপদ রাখতে করণীয়

সন্তান ইন্টারনেটে বেশি সময় কাটালে তা নিয়ে চিন্তিত হওয়ারই কথা, তবে এতে আতংকিত হয়ে সন্তানকে মারধোর, ইন্টারনেট অ্যাকসেস একেবারে বন্ধ করে দেয়াটা বোধহয় বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। তারচেয়ে বরং কৌশলী হোন – সন্তানকে বুঝিয়ে বলুন ইন্টারনেটের ভালো-খারাপ সব দিক, নিয়ম মাফিক ব্যবহার করলে সে নিয়মিত এই সুযোগ পাবে আর তা না করলে এই সুযোগ বন্ধ করে দিতে পারেন।

• বাসায় পারিবারিক আবহ গড়ে তুলুন।
• বাচ্চাদের নিয়মিত বেড়াতে নিয়ে যান ও খেলাধুলা করার সুযোগ করে দিন।
• কাজের মাঝে সময় করে সন্তান কোথায় আছে, কার সঙ্গে মিশছে – জানার চেষ্টা করুন।
• তার বন্ধু কারা কারা, কাদের সাথে সচরাচর মিশে – তার একটি তালিকা রাখুন ও প্রয়োজনে যাচাই করুন।
• প্যারেন্টাল কন্ট্রোল সমৃদ্ধ অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করে সন্তান ইন্টারনেটে কী করে – নজর রাখুন।
• বাচ্চাকে বুঝিয়ে বলুন অনলাইন গেমিং অ্যাকাউন্টে নিজের তথ্য কম দেয়াই ভালো।
• অন্য গেমার চ্যাটিংয়ে নাম, পরিচয়, কোথায় থাকে বা ফোন নম্বর ইত্যাদি চাইলে যেন এড়িয়ে যায়।
• সোশ্যাল মিডিয়াতেও সন্তানের বন্ধু হয়ে থাকুন।
• খেয়াল রাখুন সেখানে তার কোনো ছবি, স্ট্যাটাস ইত্যাদি যেন পাবলিক ভিউতে না দেয়া থাকে।
• সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইলে অপরিচিত ও ফেক আইডি না রাখতে সন্তানকে বুঝিয়ে বলুন।
• বাড়তি জনপ্রিয়তার আশায় যেকোনো উপলক্ষে ‘লাইভে’ যাওয়ার প্রবণতাকে নিরুৎসাহিত করুন।
• ছুটির সময় হলেও কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারের সময়সীমা ঠিক করে দিন।

পাশাপাশি, সন্তানের সাথে বন্ধুত্বমূলক সম্পর্ক গড়ে তুলুন, যেন অনলাইনে কোনো হয়রানির শিকার হলেও তা আপনাকে জানায়। মনে রাখবেন, অনলাইনে হেনস্থার শিকার হলে কখনোই চুপ করে থাকার কথা ভাববেন না, সরাসরি আইনের সাহায্য নিন। চুপ করে থাকলে সমস্যা কমবে না বরং অপরাধী আরও সাহস পেয়ে যাবে। তাই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং আইনগত সহযোগিতা দেয় এমন প্রতিষ্ঠানের শরণাপন্ন হোন।