সাইবার জগতটাই এমন যে প্রতিক্ষণে তা নিজেই হালনাগাদ হচ্ছে। আর, তার ধারাবাহিকতায় প্রাযুক্তিক উৎকর্ষতার সঙ্গে সঙ্গে বছর বছর পাল্টে যাচ্ছে সাইবার হামলার গতি-প্রকৃতি। ২০১৮ সালের ধারাবাহিকতায় ২০১৯ সালে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানসমূহকে টার্গেট করে যেসব সাইবার থ্রেট বিস্তার লাভ করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে সেসব নিয়ে আমাদের এবারের পোস্ট।
গবেষণা বলছে- সাইবার অ্যাটাকের সিংহভাগ সফল হয় কেবল লোকে ফিশিং চেনে না বলে। বসের নামে ইমেইল থেকে শুরু করে মাঝরাতে উড়ে আসা আধভৌতিক ইনভয়েস – কী দিয়ে ফিশিং হয় না! আর, মেইল পেয়ে লোকে একবার লিংকে ক্লিক করলেই সর্বনাশের শুরু – একান্ত, ব্যাংকিং থেকে অফিসিয়াল তথ্য এবং কখনো কখনো গোটা নেটওয়ার্ক অ্যাকসেসও ফিশিং করে হাতিয়ে নেয় সাইবার অ্যাটাকাররা। তাই সহজেই ধারণা করা যায়- আর বছরের মতো ফিশিংই হবে ২০১৯ সালের কর্পোরেট সাইবার অ্যাটাকের মূল অস্ত্র।
ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হচ্ছে ক্লাউড কম্পিউটিং। ক্লাউড কম্পিউটিং একদিকে যেমন এন্টারপ্রাইজসমূহের জন্য অনেক কাজ সহজ করে দিয়েছে তেমনি হ্যাকারদেরও জন্য এক ধাক্কায় অনেক আক্রমণের রাস্তা খুলে দিয়েছে। ২০১৯ সালে বিস্তার ঘটতে পারে ক্লাউড কম্পিউটার অ্যাটাকেরও।
ধরা যাক, একটি প্রতিষ্ঠানে অফিস টাইমে ফেসবুক ব্যবহার করা নিষেধ। এখন কেউ যদি ভিপিএন দিয়ে কানেকশনটি বাইপাস করে ব্যবহার চালিয়ে যায় তবে তিনি একজন শ্যাডো ইউজার। আবার, যেসব অ্যাপ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিষিদ্ধ সেসব (শ্যাডো অ্যাপ নামেই বেশি পরিচিত) ব্যবহার করাও শ্যাডো ইউজিং। এমন শ্যাডো ইউজারদের সুযোগে সাইবার অপরাধীরা দুই হাজার উনিশে চিনতে পারে আপনার প্রতিষ্ঠানের নেটওয়ার্ক।
শুনতে নতুন মনে হলেও অনেকটা র্যানসমওয়্যারের মতো ক্রিপ্টোজ্যাকিংয়ের মূল উদ্দেশ্য কর্পোরেট ব্যবহারকারীদের জিম্মি করে ক্রিপ্টোকারেন্সি হাতিয়ে নেয়া।
২০১৮ সালের মতো আগামী বছর জুড়েও মাতামাতি হবে র্যানসমওয়্যার নিয়ে। এক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক কম্পিউটারে রক্ষিত ডাটা ‘লক’ করে দিয়ে তা ফেরত দেয়ার জন্য দাবি করা হয় মোটা অংকের টাকা।
আইওটি – ইন্টারনেট অব থিংস, ইন্টারনেটের সাহায্যে ঘরে কিংবা বাইরে বিভিন্ন যন্ত্রপাতিকে আন্তঃসংযুক্ত করা। বড় আকারে না হলেও ইতোমধ্যে আমাদের জীবনযাত্রায়ও ধীরে ধীরে প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে আইওটি। মোবাইল ফোন দিয়েই কম্পিউটার নিয়ন্ত্রণ, এসির তাপমাত্রা বাড়ানো-কমানো, স্মার্ট টেলিভিশন যাতে কিনা ফোনের স্ক্রিনে চলমান কার্যক্রম প্রত্যক্ষ করা যায় কিংবা ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়, ক্যামেরায় ছবি তুলে তারহীন সংযোগে তা কম্পিউটারে নিয়ে যাওয়া ইত্যাদির মাধ্যমে ধীরে ধীরে আইওটি সক্রিয় হচ্ছে অনেক প্রতিষ্ঠান। অনিরাপদ আইওটি ডিভাইসেসে আক্রমণ থেকে সতর্ক থাকতে হবে ২০১৯ সালে।