“৫১০/= এর চাকরি প্রতারনা।
গতকালের আগের দিন আমার ফোনে একটা মেসেজ আসলো জব অফার এর।
আমি যেহেতু বিডি জবস থেকে প্রায়ই এপ্লাই করি তো মেসেজ দেখে অবাক না হয়ে মেসেজটা পড়লাম।
মেসেজ এ লেখা।
Dear Applicant.you have an interview.for “Customer care executive”post.Nature:Part/full time.Salary:(8000tk)part (16000tk)full.so plz come to our office.with CV,photo 2copys.**-**-2017.10am-03 pm.**** foundation.beside ****.Mohammodpur.Dhaka. Call:017*****0. **** Rahman.সো basically আমি সিভি নিয়ে গেলাম।লোকেশনে গিয়ে দেখলাম যিনি ইন্টারভিউ নিবেন তিনি সিড়িতে দাঁড়িয়ে সিগারেট ফুঁকছেন। উনি জিজ্ঞেস করলেন ইন্টার্ভিউ এর জন্য এসেছেন? আমি বললাম হ্যা।
ভিতরে নিয়ে গেলেন রিসিপশন এর ভিতর দিয়ে মুটামুটি একটা অফিস।
উনিও সাধারণ কাতারের একজন যিনি সবার সাথে বাইরেই বসেন।আমি বসার পর পরিচয় টরিচয় শেষ করে নর্মাল কোশ্চেন+নিজের সম্পর্কে বলার পরেই বললেন আপনার মৌখিক আরেকটা পরীক্ষা হবে সেটায় আপনাকে ৫১০/= দিতে হবে।(মনে সন্দেহ আটকে গেল).
আমি বললাম এখন তো সাথে নাই।
জিজ্ঞেস করল- কখন দিতে পারবেন।
আমি বললাম -কালকে হলে কালকেই।
বলল আচ্ছা।তাহলে এখন ইন্টার্ভিউ দেন। কালকে ৫১০/=+জন্ম নিবন্ধন/পরিচয়পত্র+সার্টিফিকেট এর কপি নিয়ে আসবেন যদি হয়।(যে ব্যাংক/ফাউন্ডেশন কতৃপক্ষ এর নাম দিয়ে মেসেজ এ উল্লেখ ছিল দরজায় আবার অন্য NGO এর নাম ছিল। এবং ওই মেসেজের নাম এর ফাউন্ডেশন+ব্যাংক খুবই সনামধন্য )
পাশের টেবিলে পাঠালেন উনিও সালফিউরিক এসিডের সংকেত জিজ্ঞেস করে + ফর্মাল আমার সম্পর্কে জানতে চেয়ে বললেন ওকে,আমার জব হয়ে গেছে।
আগামীকাল কাগজপত্র এবং ৫১০/= নিয়ে আসতে ১ঘন্টায় উনি আমাকে সব বুঝিয়ে দিবে।এভাবে দুইদিন ট্রেনিং এর পর আমি নাকি চাকরিতে যুক্ত হব।আমি তো অবাক এতটা আন অফিশিয়াল!!!
যাইহোক তখনও আমি বুঝিনি ওদের চাল।বাসায় এসে পেপারস রেডি করে পরেরদিন গেলাম।বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময় এর থেকে লেইট এ যাওয়া হয়( ৩টা কথা ছিল, আমি গিয়েছিলাম ৩:৪০)
যেয়ে দেখি পুরা অফিস খালি।একজন আয়া আসলেন বললেন স্যাররা সবাই চলে গেছেন। আমি হতাশ হয়ে বসলাম।
ফোন দিলাম বলল পরের দিন দুপুর ১২ টায় আসতে।আশা ফিরে পেলাম।
আয়া দেখল হাপাচ্ছি কারণ ৫তলায় অফিস।
বলল আপনি একটু জিড়িয়ে নিন।
তখনই আমি রিসিপশনের আসেপাশের ছবি গুলা দেখলাম।৫/৭টা মহিলা+পুরুষ নিয়ে মিটিং /মিছিল করার ছবি।(বোঝা যাচ্ছে বিমা/NGO)।আয়া দাঁড়ানো ছিল ২/১টা প্রশ্ন করলাম অফিস সংক্রান্ত তিনি বললেন কিছুই জানেন না।যাক,কালকে টাকা দেয়ার আগে জিজ্ঞেস করে নিব ঠিক করে নিলাম।
আসল টুইস্ট এখানে।
পরেরদিন সকাল ১০টায় আমার নাম্বারে কল আসলো।
কল দিছে তাও আবার এক তোতলা।
কল ধরতেই- আমি **** ইন্সুরেন্স থেকে, আপনি উমুক না?
আমি বললাম হ্যা।বলল-আপনার আজকে বীমার টাকা দেওয়ার কথা না?
আমি অবাক হয়ে বললাম-কিসের বিমা?আমি তো জব এপ্লাই করছিলাম।
কিছুটা সামলে নিয়ে -হ্যা আপনাকে সাথে আরো কিছু আনতে বলে নাই?(মুটামুটি রাগান্বিত)
আমি বললাম -হ্যা,পেপারস+টাকা।
বলল-তাহলে আপনি আসেন না কেন?(থ্রেট রীতিমত)
আমি বললাম -আমাকে তো টাইম দিছিল ১২টায় এখন ১০টা বাজে।বলল-এখন আসতে পারবেন না?
আমি বললাম হ্যা পারব।
বলল-তাহলে এখন আসেন।
আমি আচ্ছা বলে রেখে দিলাম।এখন বলি ওদের অফিস যেমন ব্যাঙের ছাতার মত দেখলাম ওরা নিজেরা ৫০০০/= এর বেশি বেতন পায় বলে মনে হয় না।এবং যে ইন্সুরেন্স সেটার নামও জীবনে শুনি নাই।
আমি ইন্টার্ভিউ দেওয়ার সময় সমবয়সী আরেকজনকে দেখলাম ইন্টারভিউ দিচ্ছে এবং বের হওয়ার সময়ও কম বয়সী একজনকে দেখছিলাম দৌড়িয়ে উঠছিলো।
আমার টাকা জমার পর হয়ত চাকরি দেওয়ার কথা বলে নিজের টাকায় কল দিয়ে মানুষকে বীমা করানোর মত পাগলের জব ধরিয়ে দিত(ভারতে চলমান)/আর নাহয় ঘুরাতো/টাকার কথা বললে হয়তো বলতো ওইটা তো ইন্সুরেন্সের।কিন্তু আমার তো ইচ্ছা/ সম্মতি কোনটাই নেয় নি ইন্সুরেন্স করার। ২/১দিন ওদের অফিস ঘুরতাম। তারপর বিরক্ত হয়ে আর যেতাম না।
আমার প্রশ্ন এগুলা ব্যাঙের ছাতাগুলার লাইসেন্স আসে কোত্থেকে?
ডেসটিনি যাওয়ার পরও এদের শিক্ষা হয়নি?
চাইলে পারিবারিক সহায়তায় উপযুক্ত অবস্থায় নিতে পারতাম, কিন্তু বাসার অনুমতি ব্যতীত এপ্লাই করছিলাম তাই আর পানি ঘোলা করলাম না।সবাই একটু সাবধান থাইকেন এসব প্রতারণা থেকে।”
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের জনপ্রিয় ডেস্পারেটলি সিকিং ঢাকা, সংক্ষেপে ডিএসডি গ্রুপে একজন এই পোস্টটি করেছেন। চাকরি না হোক, চাকরির খবর পাওয়া এখন অনেক সহজ। পুরানো দিনের নাটক/সিনেমার মতো ফাইল হাতে নিয়ে এখন অফিসে অফিসে গিয়ে দারোয়ানকে জিজ্ঞেস করা লাগে না, এমনকি রোজ রোজ পোস্ট অফিসে গিয়ে ইন্টারভিউয়ের চিঠি এসেছে কি না তাও খোঁজ নিতে হয় না! ঘরে বসে চাকরি খোঁজার ওয়েবসাইটে ক্লিক করলেই পাওয়া যায় সেক্টরভিত্তিক অজস্র অনলাইন বিজ্ঞপ্তি। চাইলে সাবস্ক্রাইবও করে রাখতে পারেন সেক্টরভিত্তিক সার্কুলার, এতে পরে আর আপনাকে নিজে থেকে সাইটে এসে চাকরি খুঁজতে হবে না। ওয়েবসাইট থেকে সেক্টরভিত্তিক বাছাই করা সেরা চাকরি মতান্তরে বিজ্ঞাপন দেয়া প্রতিষ্ঠানের চাকরি নিজে থেকেই আপনার মেইলবক্সে গিয়ে বলবে, “আমাকে করবেন?”!
কিন্তু যদি উপরের উদাহরণের মতো প্রতারণার ফাঁদে পড়েন? এমন পরিস্থিতি এড়াতে চলুন তবে দেখে নেই কী কী বৈশিষ্ট্য থেকে বুঝে নেয়া যাবে অনলাইনে চাকরির ফাঁদ!
বিডিজবস বা অন্য কোনো সাইটে মূল বিজ্ঞাপন প্রকাশ করে যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি লিংক ফেসবুকে শেয়ার করতেই পারেন, কিন্তু কেউ যদি কেবল ফেসবুকেই বিজ্ঞাপন দেয় তবে তা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। ফেসবুকে চাকরির কোনো বিজ্ঞাপন দেখলে তার সঙ্গে মূল বিজ্ঞাপনের লিংক দেয়া আছে কি না তা দেখুন এবং ক্লিক করে সেখান থেকেই বিস্তারিত দেখুন (কেননা এমনও হতে পারে – যে কেউ মূল বিজ্ঞাপনের যোগাযোগের ঠিকানা বা ফোন নম্বর পরিবর্তন করে তার বসিয়ে দিতে পারে, তাই সাবধানতা অবলম্বন করাই ভালো)।
বিজ্ঞাপনে যোগাযোগের জন্য যে ঠিকানা ও ফোন নম্বর দেয়া আছে, তা অবশ্যই যাচাই করে নিতে ভুলবেন না। যত বড় আর নামী প্রতিষ্ঠান হোক না কেন নিজে থেকে ওয়েবসাইট খুঁজে কন্টাক্ট পাতা থেকে নম্বর মিলিয়ে নিন, প্রয়োজনে কল করে ঠিকানা নিশ্চিত হয়ে নিন।
আপনি আবেদন করেননি, এমনকি হয়তো নামও শোনেননি – এমন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ইন্টারভিউ’র জন্য আসা এসএমএসও এড়িয়ে যাওয়া ভালো।
৫১০ কিংবা যত ছোট পরিমাণের হোক না কেন, চাকরিতে ট্রেনিং বা রেজিস্ট্রেশনের জন্য কোনো ফি দেবেন না। মনে রাখবেন, সাধারণত মানসম্মত প্রতিষ্ঠান নতুন লোকবলের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখে যার খরচ সম্পূর্ণভাবে কোম্পানিই বহন করে থাকে। তাই এই বাবদ কাউকে কোনো অর্থ প্রদান করা থেকে বিরত থাকুন।